চলছে তীব্র দাবদাহ। গরমে ভালো লাগছে না। এমন সময় যদি ঠান্ডার কথা বলি, তবে কেউ কেউ রেগে যেতে পারে। কিন্তু একটু ভেবে দেখো, আমাদের এখানে গরম হলেও পৃথিবীর অনেক জায়গায় এখন তীব্র শীত। এন্টার্কটিকায় যেমন। এখন ওখানে মাইনাস ৫৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীত কিন্তু গরমের মতোই এক চরম আবহাওয়া। এমন আবহাওয়ায় অ্যান্টার্কটিকায় কীভাবে প্রাণী বেঁচে থাকে? বিশেষ করে পেঙ্গুইন। সেটি নিয়েই আজকের ছবির গল্প। প্রকৃতিতে তীব্র ঠান্ডায় সব প্রাণী জড়সড় হয়ে যায়। গরমে যেমন প্রাণী হাপিয়ে যায়, ঠিক তেমনি। পেঙ্গুইন তীব্র ঠান্ডায় কীভাবে নিজেকে রক্ষা করে, চলো ভেবে দেখি।
পেঙ্গুইন নিজের ঘন পালক দিয়ে নিজেকে রক্ষা করে। ঘন পালক ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা করে। এমনকি পালকে মোমের উপাদান থাকায় পানিকে ঠেকিয়ে দেয়। শরীর পর্যন্ত ভিজতে দেয় না। পালকের ফাঁকে ফাঁকে বাতাস আটকে থাকে। সমুদ্রে ডুব দেওয়ার সময় এই বাতাস পোশাকের মতো আস্তরণ দেয়।
ঠান্ডায় পেঙ্গুইন টিকে থাকার জন্য শরীরে চর্বির পুরু স্তর দিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা তৈরি করে। তবে চর্বির স্তর থাকলেও শরীরে তাপ উৎপন্ন করতে এদের পানিতে ছোটাছুটি করতেই হয়।
পেঙ্গুইনের পিঠের দিকের পালক কালো থাকে। যেন কোট পরে আছে। পালকের কালো কোট দিয়ে পেঙ্গুইন তাপ ধারণ করে। সাদা জিনিস তাপ প্রতিফলিত করে, কালো তাপ শোষণ করে। এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে শরীর গরম রাখে পেঙ্গুইন।
তীব্র গরমে তুমি নিশ্চয়ই শীতের কথা ভুলে গেছ। শীতে আমরা যেমন দুই হাত শরীরের সঙ্গে লাগিয়ে রাখি, তেমনি পেঙ্গুইন ফ্লিপার বা দুই ডানা শরীরের দুই পাশে লাগিয়ে রাখে। ফলে শরীরের তাপ খুব বেশি বের হয়ে যায় না।
পেঙ্গুইনের জুতা পরার সুযোগ নেই। তবে ওর পায়ে এমন এক স্তর আছে, যেটা ঠান্ডা প্রতিরোধ করে। ঠিক আমাদের জুতার মতো। শরীরের পুরো ওজন পায়ে ও লেজে চাপিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। শরীরের ক্ষুদ্র অংশ ঠান্ডা বরফ স্পর্শ করে।
হাজারো ছেলে পেঙ্গুইন একসঙ্গে হয়ে ঠান্ডা প্রতিরোধ করে। সবাই একসঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে জায়গাটা গরম করে। ছেলে পেঙ্গুইনদের ছয় হাজার পর্যন্ত সদস্য একেক দলে ভিড় করে। তখন মেয়ে পেঙ্গুইনরা খাবারের খোঁজে সমুদ্রে যায়। ডিম তখন থাকে ছেলে পেঙ্গুইনের পায়ের পাতার ওপরে।