যশোর-খুলনার কোন লাইব্রেরিতে বই পড়া যায়
যশোরের গ্রন্থাগারটির পুরো নাম যশোর ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরি। যশোরের তৎকালীন জেলা কালেক্টর আর সি রেকস এই লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা। আমরা মনে রাখতে চাই, যশোরে যখন এই গ্রন্থাগারটি হলো, তখনো হয়নি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি স্কটল্যান্ডও তখন গণগ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার অধিকার পায়নি। আর যশোর তখন এক মফস্সল শহর, লোকসংখ্যা আট হাজারের সামান্য বেশি। একদিকে বইপাঠ ও সাহিত্যসভা, অন্যদিকে গানের আসর, নাটকের অভিনয়, খেলার মাঠে সরগরম নানা প্রতিযোগিতা—সব মিলিয়ে এই লাইব্রেরির প্রভাবে যশোর তখন হয়ে ওঠে ওই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক রাজধানী।
এই গ্রন্থাগারে মোট বইয়ের সংখ্যা ৯৫ হাজারের কাছাকাছি। এখানে হাতে লেখা প্রায় ২০০ পাণ্ডুলিপি আছে। কিছু তুলোট কাগজ ও তালের পাতায় লেখা। বেশির ভাগের ভাষাই সংস্কৃত। ৩৭টি জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং ২টি সাময়িকী রাখা হয়। তবে এত বই থাকার পরেও পাঠকদের বড় অংশ পত্রিকা পড়েন। ভালো খবর হলো, তরুণ বয়সে যাঁরা এই লাইব্রেরিতে যেতেন, তাঁদের কেউ কেউ এখন যশোরে বই পড়ার আন্দোলনকে এগিয়ে নিচ্ছেন, নিয়মিত পাঠচক্র করছেন।
খুলনার উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি বয়স ১২৮ বছর পার হলো। নড়াইলের জমিদার কিরণ চন্দ্র রায়ের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর বাবার নামে এই গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তিনতলা ভবন ও জমি গ্রন্থাগারটির নিজস্ব। নিচতলায় মিলনায়তন, দোতলায় গ্রন্থাগার ও পাঠকক্ষ, তিনতলায় রয়েছে ডা. মানাফ গবেষণা পাঠকক্ষ। বর্তমানে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। আর উল্লেখযোগ্য পত্রপত্রিকা সবই রাখা হয়। খুলনার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন এই গ্রন্থাগারে পড়াশোনা করতে যান। কারণ, তাঁদের অনেক পাঠ্যবই এই গ্রন্থাগারে রাখা হয়েছে। অনিয়মিত হলেও এখান থেকে সাহিত্যপত্র কথকতা প্রকাশ করা হচ্ছে। নিয়মিত আয়োজন করা হয় ছোটদের বই পড়া প্রতিযোগিতা।