নোবেল পুরস্কারের মাস

নোবেল পুরস্কারের জানা-অজানা

অক্টোবর ১, ৩১ বছরের পুরোনো রহস্যের সমাধান

৩১ বছর ধরে গুপ্তধন অনুসন্ধানকারীদের কল্পনা ও কৌতূহলকে জাগিয়ে রেখেছিল গোল্ডেন আউলের রহস্য। এই গোল্ডেন আউল বা স্বর্ণপ্যাঁচা লুকানো ছিল ফ্রান্সের কোনো এক স্থানে। ‘দ্য হান্ট ফর দ্য শুয়েত দর’ নামের এই প্রতিযোগিতায় চ্যালেঞ্জ ছিল, সোনা, রুপা ও মূল্যবান পাথর দিয়ে তৈরি একটি ডানা মেলা প্যাঁচার মূর্তি খুঁজে বের করতে হবে। এটি ফ্রেঞ্চ হান্ট নামে বেশি পরিচিত। এই প্যাঁচার সন্ধানে মানুষ এত পাগল হয়ে পড়েছিল যে অনেকের জীবনই প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

১ অক্টোবর হান্ট কর্তৃপক্ষ অফিশিয়াল চ্যাটলাইনে একটি পোস্ট করে। তারা জানায়, ‘আমরা সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে পেয়েছি। এখন যাচাইয়ের কাজ চলছে। শিগগিরই সবাই জানতে পারবে, এই খোঁজাখুঁজি সফল হয়েছে কি না।’ দুই ঘণ্টা পর ডিসকর্ডে আরেকটি পোস্টে জানানো হয়, সোনালি প্যাঁচার প্রতিরূপটি গত রাতে পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে সঠিক উত্তরও তারা পেয়েছে। তাই আর খোঁজাখুঁজি করার দরকার নেই।

আরও পড়ুন

১৯৯৩ সালের এপ্রিলে ফরাসি ব্যবসায়ী ম্যাক্স ভ্যালেন্টিন এক অদ্ভুত ঘোষণা দিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। ফ্রান্সের কোথাও একটি ব্রোঞ্জের প্যাঁচার মূর্তি লুকিয়ে রেখেছেন তিনি। এই মূর্তি খুঁজে বের করার জন্য তিনি ১১টি রহস্যময় সূত্র দিয়ে একটি বই প্রকাশ করেছিলেন। বইটির নাম সুর ​​লা ট্রেস দে লা শুয়েত দর, যা ইংরেজিতে অন দ্য ট্রেইল অব দ্য গোল্ডেন আউল। এই বই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ‘দ্য হান্ট ফর দ্য শুয়েত দর’ বিশ্বজুড়ে গুপ্তধন সন্ধানকারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করে।

৭-১১ অক্টোবর, নোবেল পুরস্কার পেলেন যাঁরা

প্রতিবছরের অক্টোবরে সুইডেন ও নরওয়ের নোবেল কমিটি বিজ্ঞান, সাহিত্য, অর্থনীতি ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। মোট ছয়টি বিষয়ে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানী জন জে হপফিল্ড ও কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জেফরি ই হিন্টন। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিং সম্ভব করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য তাঁদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

রসায়নে এবারের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে প্রোটিন গবেষণার জন্য। কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনের জন্য এই পুরস্কারের অর্ধেক পেয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকার। আর প্রোটিনের গঠন অনুমানের জন্য বাকি অর্ধেকটা পেয়েছেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডেমিস হ্যাসাবিস ও মার্কিন বিজ্ঞানী জন এম জাম্পার।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বা শারীরতত্ত্বে নোবেল পেয়েছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। মাইক্রোআরএনএ (microRNA) আবিষ্কার ও ট্রান্সক্রিপশন-পরবর্তী জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা নিয়ে গবেষণার জন্য তাঁরা এ পুরস্কার পান।

আরও পড়ুন

সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং। হান কাংয়ের লেখায় মানবজীবনের দুঃখ–কষ্টের নানা দিক ও ইতিহাসের সঙ্গে এর সম্পর্ক প্রকাশ পেয়েছে। ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে মানুষের জীবন ও অনুভূতিগুলো খুব তীক্ষ্ণ ও কাব্যিকভাবে বর্ণনা করেছেন তিনি। হান কাং এশিয়ার প্রথম নারী লেখক, যিনি নোবেল পুরস্কার জিতেছেন।

অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক ড্যারন আসেমোগলু ও সিমন জনসন এবং ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অধ্যাপক জেমস এ রবিনসন। ‘ঔপনিবেশিক শাসনের সময় প্রবর্তিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাগুলো বর্তমানে অনেক দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্য ও দারিদ্র্যের মূল কারণ হিসেবে কাজ করে’—এ বিষয়ে গবেষণার জন্য তাঁরা তিনজন যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেছেন।

আরও পড়ুন

শান্তিতে নোবেল পেয়েছে জাপানের নিহন হিদানকায়ো সংস্থা। পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে ও পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহ পরিণতি বিশ্ববাসীকে দেখানোর জন্য নিহন হিদানকায়োর অবিরাম প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এই সংগঠন হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া মানুষদের নিয়ে কাজ করে।

আরও পড়ুন