‘অতশত বুঝি না। অনেক অনেক বই পাওয়া যায়, পছন্দের বই কেনা যায়। তাই যেতে ভালো লাগে।’
বইমেলায় যাওয়া উচিত, নাকি উচিত নয় প্রসঙ্গে সভাকক্ষ তখন বিতর্কে জমজমাট। এর মধ্যেই ছবি আঁকায় ব্যস্ত একদল খুদে পাঠক। প্রথম শ্রেণিপড়ুয়া আফসানা শবনম তাদেরই একজন। কলরবের মধ্যে তার এমন সরল যুক্তি ভাবনায় ফেলে দিল প্রত্যেককে। আসলেই তো, এত সমীকরণ দাঁড় করানোর প্রয়োজন কি আদৌ আছে? তবে সম্পাদক আনিসুল হক আক্ষেপ প্রকাশ করলেন অন্য প্রসঙ্গে। হতাশার কারণ, ‘ভিউ’ পাওয়ার উদ্দেশ্যে বইমেলায় সাংবাদিকদের করা আকস্মিক ও অদ্ভুত সব প্রশ্ন। তিনি একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা হৃদয়ে ধারণের তাগিদ দিলেন, ‘আঞ্চলিক ও অন্য সব ভাষার প্রতি সম্মান রাখতে হবে’।
আলাপের বিষয় বইমেলা থেকে গড়াল বই চুরির দিকেও। তার আগে শর্টফিল্ম মাজিদ অ্যান্ড দ্য লাইব্রেরিয়ান দেখে নিয়েছে সবাই। সহকারী সম্পাদক পাভেল মহিতুল আলম মনে করিয়ে দিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের সাক্ষাৎকারের কথা। বছর দশেক আগে কিশোর আলোর মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন বই চুরির প্রসঙ্গে নিজের অভিমত, ‘অনেকে বন্ধুর বই মেরে দেয়, কারণ বন্ধু সেটা পড়তে দিতে চায় না। যদি চুরিও করো, বইটা পড়ে আবার তার হাতে ফেরত দিয়ে দাও। বোলো যে, আমি নিয়েছিলাম, তুমি দেবে না তো ভাই, তাই। বইটা পড়েছি, আমার খুব উপকার হয়েছে।’
স্কুলের লাইব্রেরি সমৃদ্ধ হলে বই চুরির কথা আসত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলল কেউ কেউ। জরিপ চালিয়ে জানা গেল, কারও কারও স্কুলের লাইব্রেরি থেকে বই আনতে সমস্যা হয় না। এমন স্কুলের সংখ্যা অবশ্য নগণ্য। বেশির ভাগ স্কুলেই লাইব্রেরি তালাবদ্ধ থাকে। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি আরও গুরুতর। সেসব জায়গায় সাধারণ কোনো কক্ষের নামফলকে লেখা ‘গ্রন্থাগার’।
ফেব্রুয়ারি সংখ্যা নিয়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করল সবাই। কেউ বলল, সংখ্যাটি ছিল জুল ভার্নের জগতের আমন্ত্রণপত্র। আবার জুল ভার্নের পুরোনো পাঠকেরা জানাল, কিআর কল্যাণে বেশ কিছু তথ্য ওরা প্রথমবার জানতে পেরেছে। প্রশংসার পাশাপাশি ‘ক্ষোভ’ ঝরল কারও কারও কণ্ঠে, ‘কমিকস কম হয়ে গেল না?’
সময় যত যাচ্ছিল, ব্যান্ড আর্বোভাইরাসের জন্য অপেক্ষা ততই বাড়ছিল। সঞ্চালক তাই আর দেরি করলেন না, ডেকে নিলেন ব্যান্ডের সদস্যদের। কিআর সঙ্গে আর্বোভাইরাসের সম্পর্ক বেশ দারুণ। এ নিয়ে তৃতীয়বার কিআড্ডায় এলেন তাঁরা। ব্যান্ডটির নতুন অ্যালবামের কাজ চলছে। জানিয়ে রাখলেন, ব্যাটে–বলে মিললে কোনো একটি মিউজিক ভিডিওতে কিআর স্বেচ্ছাসেবকদের পাশে চান তাঁরা। আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে আর্বোভাইরাসের সঙ্গে ‘আমার শহর’, ‘স্কুল’-এর মতো শ্রোতাপ্রিয় গানগুলোয় মশগুল হলো প্রত্যেকে।
কুইজ, গেমসেও মুহূর্ত কাটল আরও কিছুক্ষণ। ততক্ষণে বাড়ি ফেরারও সময় হয়েছে। আইসক্রিম হাতে তাই বাড়ির পথ ধরল সবাই।