১. মৌমাছিদের ওজন বেশি
প্রচলিত আছে, মৌমাছির ওজন ডানার আকৃতির তুলনায় অতিরিক্ত। এত ছোট ডানা ঝাপটিয়ে এত ওজনদার শরীর নিয়ে মৌমাছি ওড়ে। এই কাহিনি ছড়িয়েছে ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত বই ‘লে ভল দেস ইনসেকটস’। এই বইয়ের লেখক এন্টোইন ম্যাগনান। তিনি ভুলভাবে বিষয়টি দেখেছিলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল, মৌমাছির ডানা খুব ছোট। বড় শরীর নিয়ে ওড়ার জন্য প্রয়োজনীয় লিফট এই ডানা তৈরি করতে পারে না। স্পষ্টতই তিনি ভুল ছিলেন। মৌমাছির শরীরের ওজন ডানার আকারের তুলনায় বেশি নয়।
২. সব মৌমাছি হুল ফোটায়
আসলে পুরুষ মৌমাছি হুল ফোটাতে পারে না। হুল আসলে ডিম পাড়ার জন্য রূপান্তরিত একটি অঙ্গ। এটি কেবল মেয়ে মৌমাছির মধ্যে পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রায় ৫৫০ প্রজাতির হুলবিহীন মৌমাছি আছে। এদের হুল এত ছোট যে প্রতিরক্ষামূলক কাজে এটি ব্যবহারই করা যায় না।
৩. হুল ফোটানোর পর মারা যায়
যেসব মৌমাছি হুল ফোটাতে পারে, এদের মধ্যে শুধু মধুপায়ী মৌমাছিই হুল ফোটানোর পর মারা যায়। এদের হুলের কাঁটা শিকারের ত্বকে আটকে যায়। মৌমাছি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেই পেট মারাত্মকভাবে ফেটে মারা যায়।
৪. সব মৌমাছি মধু তৈরি করে
বেশির ভাগ মৌমাছি মধু তৈরি করে না। আসলে মৌমাছির মাত্র আটটি প্রজাতি আছে, যারা প্রচুর পরিমাণে মধু তৈরি করে। এর বাইরে শত শত মৌমাছির প্রজাতি আছে, যারা মধু তৈরি করে, তবে খুব সামান্য পরিমাণে।
৫. মৌমাছি কঠোর পরিশ্রমী
নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্যের বিখ্যাত ছড়ায় আছে—
মৌমাছি মৌমাছি
কোথা যাও নাচি নাচি
দাঁড়াও না একবার ভাই
ঐ ফুল ফোটে বনে
যাই মধু আহরণে
দাঁড়াবার সময় তো নাই।
ছোটবেলায় এই ছড়া পড়েছি আমরা। আমরা জানতাম, মৌমাছির অনেক ব্যস্ততা। আসলেই কি তাই? আসলে রানি ও পুরুষ মৌমাছির তেমন কোনো কাজ নেই। সব মৌমাছি আসলে খুব ব্যস্ত থাকে না। রানি মৌমাছি প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ ডিম দেয়। যত কাজ করে কর্মী মৌমাছি। সারা দিন খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়, ডিম পরিষ্কার করে, ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলে একে খাওয়ায়, মৌচাক ঠিকঠাক রাখে। আরও কত কী।