জোরে চালালে থেমে যাবে সাইকেল, নেদারল্যান্ডসে আসছে নতুন প্রযুক্তি

‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে উইড়া উইড়া’—কিন্তু এমনটা একবারেই চাইছে না নেদারল্যান্ডসের আমস্টার্ডাম শহরের কর্তৃপক্ষ। ফলে তারা এমন একটি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যাবহারের চিন্তা করছে, যেন বাতাসের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাইকেল চালানোর স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়।

আমস্টার্ডাম শহরে বৈদ্যুতিক সাইকেলগুলো চলে ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে। ফলে প্রতি সপ্তাহে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জনের বেশি মানুষ গুরুতর আহত হন, প্রতি মাসেই মারা যান কেউ না কেউ। ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ শ মানুষ গুরুতর আহত হয়েছিল। সেই সঙ্গে নিহত হয়েছিল ১৩ জন মানুষ। নেদারল্যান্ড থেকে প্রকাশিত পত্রিকা এনএল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদ্যুতিক সাইকেল ব্যবহারের সংখ্যা সাধারণ বাইসাইকেল থেকে বহুগুণ বেড়ে গেছে। আর এই সাইকেল চালকদের সঙ্গে জড়িত দুর্ঘটনার সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেশি। এর ফলে শিশুরা আর বাইসাইকেল চালাতে সাহস পায় না। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে এটা অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি। তাই তারা বৈদ্যুতিক সাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ করতে চান ঘণ্টা প্রতি ৩০ কিলোমিটার।

এই প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করেছে টাউনমেকিং ইনস্টিটিউট নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এটি ব্যবহার করতে তাদের তৈরি একটি যন্ত্র বৈদ্যুতিক সাইকেলের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। সেইসঙ্গে ডাউনলোড করতে হবে নির্ধারিত একটি অ্যাপ। ব্যাস, এটুকুই। এপর এই সুবিধাসম্বলিত বৈদ্যুতিক সাইকেলটি যখন কোন স্কুল, ব্যস্ত রাস্তার মোড় বা কোনো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রবেশ করবে, তখন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্যাডেল সুবিধা বন্ধ হয়ে বৈদ্যুতিক সাইকেলের গতি কমে যাবে।

আরও পড়ুন

শিফল বিমানবন্দরটি আমস্টার্ডাম শহরের ঠিক বাইরে অবস্থিত। এ প্রায় ৪ হাজার কর্মী যাতায়তের জন্য সাইকেল ব্যবহার করে। যা আমস্টার্ডাম শহরের তুলনায় অর্ধেক। ধারণা করা হচ্ছে ২০২৪ এর শেষ দিকে এই সংখ্যা ১০ হাজারে উন্নিত হবে। ফলে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এমন একটি ব্যবস্থার প্রয়োজনিয়তা বেশ ভালভাবেই বুঝতে পারছে কর্তৃপক্ষ।

আর এতসব আয়োজন আমস্টার্ডামের সড়কগুলোকে নিরাপদ রাখার জন্যই। শহরের কর্তৃপক্ষ মনে করছেন এই স্বয়ংক্রিয় চৌকস গতি নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সকলের জন্যই সড়ক হয়ে উঠবে আরও নিরাপদ।

তবে শুধু আমস্টার্ডাম শহরে নয়, মিলান, এথেন্স, মিউনিখসহ আরও ছয়টি ইউরোপিয়ান শহরেও পরীক্ষামূলকভাবে চালু হতে যাচ্ছে গতি নিয়ন্ত্রক এই প্রযুক্তি। উদ্দেশ্য একটাই—মানুষের জীবন বাঁচানো। কেননা ‘সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।’

আরও পড়ুন