কিআড্ডা থেকে লেখালেখি
আমি তখন স্কুলে পড়ি। কিশোর আলোর প্রতি সংখ্যায় দেখতাম কিআড্ডার কথা। মাসিক সভার সারসংক্ষেপ লেখা থাকত সেখানে। ফেসবুক পেজে ছবি আপলোড করা তো হতোই। এখনো হয়। কিন্তু তফাতটা হচ্ছে, তখন কিআড্ডায় আমার একদমই অংশ নেওয়া হতো না। লেখায় ও ছবিতে কিআড্ডায় অংশ নেওয়া সবার চোখেমুখে উচ্ছ্বাসের স্পষ্ট ছাপ দেখতে পেতাম। ঠিক করেছিলাম, এসএসসি পরীক্ষার পরের ছুটিতে নিয়মিত অংশ নেব আমিও। কিন্তু বাদ সাধল করোনাভাইরাসের মহামারি। ঢাকা কিআ বুক ক্লাবের তিন মাসব্যাপী অনলাইন সেশন অনুষ্ঠিত হলো। কিন্তু থমকে গেল প্রতি মাসের মিটিং।
করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার পর কিআড্ডা শুরু হলো আবারও। স্কুলের পাট চুকিয়ে আমি তখন কলেজজীবনের শেষ প্রান্তে। ভীষণ উৎসাহ নিয়ে সভাগুলোয় অংশ নিতে থাকলাম। ফটোগ্রাফি, বিজ্ঞাপন, বই—নানা বিষয়ে গুণীরা কথা বলতেন একেকটি আড্ডায়। গান শোনাত দারুণসব ব্যান্ড। কুইজ হতো। দেওয়া হতো পুরস্কার, উপহারও। ভালো লাগত সেসব। তবে কিআড্ডাকে আমার কাছে ‘স্পেশাল’ মনে হওয়ার পেছনে আরও দুটি কারণ আছে—
এক, অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে কয়েকজনের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। ভালো মনের ও ভালো রুচিবোধের মানুষ ওরা।
দুই, মিটিং মিনিটস। মাঝেমধ্যে আমাকে বলা হতো, সভায় কী হচ্ছে না হচ্ছে, সেসবের নোট রাখতে। বাসায় ফিরে যেন সাবলীলভাবে বিস্তারিত লিখে পাঠাই। এ কাজটা করতে গিয়ে আমার মধ্যে তৈরি হয়েছিল একধরনের দক্ষতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তা কাজে লাগছে। তা ছাড়া বুক ক্লাব, কিআড্ডার ধারাবাহিকতায় এখন কিশোর আলোয় ফিচারও লিখছি নিয়মিত।
যেখান থেকে এত কিছু, স্কুলের দিনগুলোয় যে আয়োজন নিয়ে বেশ আগ্রহ ছিল, সেই কিআড্ডার ১০০তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে দেখে আমি ভীষণ আনন্দিত! শুভকামনা, কিআ!
লেখক: প্রদায়ক, কিশোর আলো, শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, ঢাকা