অনুপ্রেরণা
তাপপ্রবাহে বিইউপি শিক্ষার্থীদের অন্য রকম অ্যাসাইনমেন্ট
মে মাসের শুরুতে ঢাকায় বৃষ্টিতে গরম কমে এসেছে। তবে এপ্রিল মাসজুড়ে প্রচণ্ড গরম ছিল দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে। এমন সময়ে একজন বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দিয়েছেন অন্য রকম অ্যাসাইনমেন্ট।
পল্লবী মেট্রোস্টেশন থেকে নামতেই চোখে পড়ল অন্য রকম এক দৃশ্য। রিকশাচালকদের কাছে পানীয় ও বিস্কুট বিলি করছেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের গলায় ঝোলানো বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের পরিচয়পত্র। জানা গেল, তাপপ্রবাহের এই সময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করা ‘মামাদের’ একটু স্বস্তির জন্যই তাঁদের এই আয়োজন। পাশাপাশি, এ উদ্যোগের সঙ্গে থাকলে নাকি পরীক্ষায় পাওয়া যাবে বাড়তি নম্বরও।
তবে, বাড়তি নম্বর পাওয়া নিয়ে তাদের খুব একটা আগ্রহী মনে হলো না। শিক্ষার্থীরা বললেন, জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্রান্তিকালে করণীয়র তালিকাটা বেশ লম্বা। কিন্তু সেসবের ফলাফলের দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘ একটা সময়। তাই তাঁরা বুঝে উঠতে পারছিলেন না, এই দিনগুলোর অস্বস্তি নিয়ে কী করা যেতে পারে। এ ছাড়া সেসব পদক্ষেপ আদৌও যথেষ্ট হবে কি না, সংশয় ছিল তা নিয়েও।
এমন পরিস্থিতিতে মুহাম্মাদ নাফিস শাহরিয়ার শিক্ষার্থীদের এই বাড়তি নম্বরের অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে উদ্বুব্ধ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক। তাঁর মতে, ‘স্মল স্টেপস ম্যাটার’। কিন্তু একাডেমিক কার্যক্রমের সঙ্গে এ ধরনের অ্যাসাইনমেন্টের প্রাসঙ্গিকতা কী? প্রভাষক নাফিস মনে করিয়ে দিলেন, জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই তো বিশ্ববিদ্যালয়।
শিক্ষকের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শিক্ষার্থীরা তাই নিজেদের হাত খরচের একটা অংশ বরাদ্দ রাখছেন রিকশাচালকদের স্বস্তির জন্য। শিক্ষার্থীদের আশা, এই উদ্যোগ অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে। সহযোগিতা করতে একটি ইলেকট্রোলাইট পানীয় কোম্পানির এগিয়ে আসার কথা বললেন আরেক দল শিক্ষার্থী।
হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসের সূত্রে প্রচণ্ড গরমের সময় হঠাৎ বয়ে যাওয়া শীতল হাওয়ার নাম জানা যায় ‘লিলুয়া বাতাস’। উদ্যোগটি সম্পন্ন করে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা গেয়ে উঠলেন, ‘লিলুয়া বাতাস বহিছে ভুবনে’।