আমাদের সবার ঘরেই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাণঘাতি প্রাণীটি রয়েছে। মশার কথা বলছিলাম। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসির সায়েন্সফোকাসের মতে, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে যে প্রাণীর কারণে, সেটি মশা। ছোট্ট এই মশা সরাসরি মানুষকে মারে না। এরা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো মারাত্মক সব ভাইরাস বহন করে। এ কারণে নানা রকম রোগে ভুগে প্রতিবছর পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষ মারা যান।
যুক্তরাজ্যের ঘটনা একটু ভিন্ন। সেখানে স্থানীয়ভাবে ৩৬ প্রজাতির মশা আছে। তবে, দেশটির সবচেয়ে প্রাণঘাতির প্রাণির তালিকায় প্রথম তিন অবস্থানে এদের পাওয়া যাবে না। সেখানকার সবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণী হলো কুকুর। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের কুকুরসংক্রান্ত প্রাণহানী বেড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ঋশি সুনাক রীতিমতো আইন করে আমেরিকান এক্স বুল নামের এক প্রজাতির কুকুর রাখা নিষিদ্ধ করেন।
আগে প্রতিবছর গড়ে তিনজন মানুষ মারা যেত কুকুরের কামড়ে। কিন্তু ২০২২ সালে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস মিলে ১০ জন মানুষ মারা যান কুকুরের কামড়ে। এই বৃদ্ধির পেছনে মালিকের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও দিনকে দিন কুকুরের বড়, পেশীবহুল প্রজাতির ওপরে মানুষের আগ্রহ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অনেক সময় আকারে ছোট হলেও সেটা ভয়ংকর হতে পারে। দেশটির দ্বিতীয় প্রাণঘাতি প্রাণীটি হলো মৌমাছি ও বোলতা। যুক্তরাজ্যের প্রায় ০.৫ শতাংশ মানুষ এসব প্রাণীর হুলে থাকা বিষের প্রতি অ্যালার্জিক। ফলে, হুল ফুটলে অনেকেই বিষক্রিয়ার পাশাপাশি অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন। এর ফলে হয় মারাত্মক অ্যানাফিল্যাক্সিস। গড়ে প্রতিবছর ২ থেকে ৯ জন মানুষ মারা যান মৌমাছি ও বোলতার আক্রমণে।
গরুকে তোমার কেমন মনে হয়? যদি বলি, শান্তশিষ্ট এই প্রাণীটি যুক্তরাষ্টের তৃতীয় প্রাণঘাতী প্রাণী, বিশ্বাস করবে? ঘটনা আসলেই তাই। প্রতিবছর প্রায় ৪ হাজার লোক গরুর আক্রমণের স্বীকার হয় দেশটিতে। এর মধ্যে প্রায় পাঁচজন মানুষ আঘাতের কারণে মারা যান। এই মৃত্যুর ঝুঁকি অবশ্য কৃষকদের বেশি। তবে, পথচারীরাও মাঝে মধ্যে শিকার হয় আক্রমণের।
বন্য অবস্থায় গরু মূলত শিকারী প্রাণীর খাদ্য। অর্থাৎ এরা অন্য মাংশাসী প্রাণীর শিকার হতো বনে মুক্তভাবে থাকার সময়। ফলে বাছুরকে বাঁচাতে গরুকে হতে হতো একটু কৌশলী, শক্তিশালী, আক্রমণাত্মক। তাই শান্তশিষ্ট প্রাণীটি প্রয়োজনে ভয়ংকর হয়ে উঠতেই পারে।
সূত্র: সায়েন্স ফোকাস