যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল পদক পেলেন এহসান হক

এহসান হকছবি: খালেদ সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানসূচক প্রেসিডেন্সিয়াল পদক পেলেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী এহসান হক। মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে চলতি বছর এ পদকে সম্মানিত ৪০০ বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীর নাম ঘোষণা করে হোয়াইট হাউস।

দ্বিতীয় বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে এ পদক পাচ্ছেন এহসান হক। পুরস্কারটির নাম ‘প্রেসিডেনশিয়াল আর্লি ক্যারিয়ার অ্যাওয়ার্ড ফর সায়েন্টিস্টস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স’ পদক। এর আগে বাংলাদেশি কম্পিউটারবিজ্ঞানী সাঈফ সালাহউদ্দিন এ পদক পান।

১৯৯৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অসাধারণ সম্ভাবনাময় বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের সম্মান জানাতে এ পুরস্কার চালু করেন। দ্বিতীয় বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে এ পদক পাচ্ছেন এহসান হক। এর আগে বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও গবেষক হিসেবে এ পদক পান বাংলাদেশি কম্পিউটার বিজ্ঞানী সাঈফ সালাহউদ্দিন।

নির্বাচিত বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউস থেকে শিগগিরই এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। তবে এখনও পুরস্কার তুলে দেওয়ার তারিখ জানানো হয়নি।

এ প্রসঙ্গে এহসান হক বিজ্ঞানচিন্তাকে জানান, ‘আসলে আমরা বিজ্ঞানে একা কাজ করি না, শিক্ষার্থী এবং সহকর্মীদের নিয়ে সবাই মিলে কাজ করি। বেশিরভাগ কাজ করে শিক্ষার্থীরা। খবরটা শুনে আমার এমনিতে ভালো লাগছে। তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সবাই মিলে পুরস্কারটা পেলে আরও ভালো লাগত।’

আরও পড়ুন

কোন কাজের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'পুরস্কার পেয়েছি এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে কাজের জন্য। স্নায়ুরোগ, ক্যান্সার, অটিজম ইত্যাদি রোগে আমরা এআই ব্যবহার করি।'

বর্তমানে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণালয়ের উদ্ভাবন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ও গবেষক এহসান হক। এর আগে তিনি সৌদি আরবের জাতীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান গবেষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সৌদি সরকারের তথ্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাকেন্দ্র সাডায়ায় কাজ করছেন তিনি। সাডায়ার পূর্ণরূপ সৌদি ডেটা অ্যান্ড এআই অথোরিটি। অর্থাৎ সৌদি তথ্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কর্তৃপক্ষ।

এহসান হকের জন্ম ঢাকায়, ১৯৮১ সালে। ছোটবেলায় পড়াশোনা করেছেন ঢাকার উদয়ন স্কুলে। সালে। ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকের পাট চুকিয়ে স্নাতকের জন্য পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। পেন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ইউনিভার্সিটি অব মেমফিস থেকে মাস্টার্স করেছেন ২০০৭ সালে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটির মিডিয়া ল্যাব থেকে পিএইচডি ও গবেষণা। উদ্ভাবন করেছেন ম্যাক ও লিসা নামের দুটি কম্পিউটার সিস্টেম। সেগুলো মুখভঙ্গি দেখে মানুষের কথা বুঝতে পারে। ২০১৬ সালে এমআইটি টেক রিভিউ ৩৫ বছরের কম বয়সী বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের একজন হিসেবে ভূষিত করে তাঁকে। ২০১৭ সালে সায়েন্স নিউজ তাঁকে ‘টেন সায়েন্টিস্ট টু ওয়াচ’ হিসাবে চিহ্নিত করে।

এহসান হক ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে গুগল ফ্যাকাল্টি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব মেডিসিন তাঁকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একজন উদীয়মান পথপ্রদর্শক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন এহসান হক। ছুটি নিয়ে বর্তমানে নতুন দায়িত্ব, সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ভাবনী বিভাগে কাজ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন