বাজেটে আইসক্রিমের দাম বাড়ছে, ছোটরা কী ভাবছে

গরমের দিনে ঠান্ডা আইসক্রিম শিশু-কিশোরদের কাছে সব চেয়ে প্রিয় জিনিসের একটি। স্কুল শেষে ভ্যাপসা গরমে ক্লান্ত শরীর নিয়ে শিক্ষার্থীরা যখন বাড়ি ফেরে, তখন একটা ঠান্ডা আইসক্রিম দূর করে দিতে পারে ক্লান্তি। প্রতিদিন না খেলেও সপ্তাহে এক–দুই দিন কারও হাতে ললি, কারও হাতে চকবার, আবার কারও হাতে কোন অথবা কাপ আইসক্রিম থাকবেই। এই ঠান্ডা মিষ্টি খাবারটা যেন ক্লান্তি দূর করে, তেমনি মনকে করে প্রফুল্ল। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আইসক্রিমের ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে, যার ফলে দেখা দিয়েছে আইসক্রিমের দাম বাড়ার আশঙ্কা। এই দাম বৃদ্ধিতে কী ভাবছে শিশু-কিশোরেরা?

৬ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এই বাজেটে তিনি সব ধরনের আইসক্রিমের ওপর বিদ্যমান সম্পূরক শুল্কহার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ এবং কার্বনেটেড বেভারেজের (কোমল পানীয়) ওপর বিদ্যমান সম্পূরক শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। এর ফলে আগামী অর্থবছরে এই পণ্যগুলোর দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আইসক্রিমের ওপর সম্পূরক শুল্কহার দ্বিগুণ এবং কোমল পানীয়ের উপর শুল্ক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার ফলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে পারে।

আরও পড়ুন
বন্ধুরা মিলে যখন একসঙ্গে হই, তখন খাই আইসক্রিম

এই ব্যাপারে ওয়াইডাব্লিউসিএ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিশার অভিভাবকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘স্কুল ছুটির পর আইসক্রিমের গাড়ি দেখে তো বাহানা করেই। প্রতিদিন কিনে না দিলেও সপ্তাহে দু-তিন দিন কিনে দিতে হয়। কিছুদিন আগে যে হিট ওয়েভ ছিল, এর মধ্যে তো বাসায় এক কার্টন আইসক্রিম কিনে রেখেছিলাম। মাত্র ১২ দিনেই খেয়ে শেষ করে ফেলেছিল দুই বোন মিলে। এখন যদি আইসক্রিমের দাম বাড়িয়ে দেয়, তাহলে তো আমাদের জন্য একটু মুশকিল হয়ে পড়বে। আবদার তো পূরণ করতেই হবে। আগে যেখানে তিনটা কিনে দিতাম, এখন হয়তো সেখানে একটা কিনে দেব।’

ললি আইসক্রিম আমার মোটামুটি ভালো লাগে। আর বাসায় মাঝেমধ্যে বক্স আইসক্রিম কিনলে ওটা খাই। দাম যদি বেশি বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আর ওই রকম খাওয়া হবে না। মাঝেমধ্যে একটা খেলাম।
গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ আলভী

আরিশাকে আইসক্রিমের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ‘স্কুল থেকে বাসায় যাওয়ার সময় আইসক্রিম না খেলে আমার ভালোই লাগে না। আমার সবচেয়ে প্রিয় কোন আইসক্রিম। আম্মু যদি আইসক্রিম না কিনে দেয়, তাহলে আমি নিজেই বাসায় আইসক্রিম বানিয়ে খাই। কিন্তু এত মজা লাগে না।’

গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ আলভী। আইসক্রিমের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সে বলে, ‘নিয়মিত আইসক্রিম খাওয়া হয় না। যখন স্কুলের সামনে অন্য কিছু না পাই, তখন বাধ্য হয়ে খেতে হয়। আর বন্ধুরা মিলে যখন একসঙ্গে হই, তখন খাওয়া হয়। ললি আইসক্রিম আমার মোটামুটি ভালো লাগে। আর বাসায় মাঝেমধ্যে বক্স আইসক্রিম কিনলে ওটা খাই। দাম যদি বেশি বাড়িয়ে দেয়, তাহলে আর ওই রকম খাওয়া হবে না। মাঝেমধ্যে একটা খেলাম।’

তৃষ্ণা মেটাতে আইসক্রিম কিনছে এই শিশুশিক্ষার্থী। ভার্থখলা, সিলেট।

তবে ঠান্ডার সমস্যার কারণে যারা আইসক্রিম খেতে পারে না, তারা বোধ হয় একটা নতুন অজুহাত পেল। আইসক্রিমের কথা জিজ্ঞেস করলে বলতে পারবে, ‘দাম বেড়ে গেছে, কী করে খাব?’

সূত্র: অর্থ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বাজেট বক্তৃতা ২০২৪-২৫

আরও পড়ুন