ইন্টারনেটের কল্যাণে ‘ন্যাস ডেইলি’ নামটা আমাদের সবার কাছে বেশ পরিচিত। ন্যাস একজন ভ্লগার, যে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন এক মিনিটের একটি ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করে দিত তার ফেসবুক পেজ ‘ন্যাস ডেইলি’তে। টানা এক হাজার দিন ন্যাস চালিয়ে যায় প্রতিদিন ভিডিও বানানোর কাজ।
৯ বছর বয়সী যওফিশান ইনায়া আহমেদ যখন আরও একটু ছোট, তখন থেকেই ন্যাস ডেইলির ভিডিও বেশ পছন্দ তার। তখনই যওফিশান মনে মনে ঠিক করে, কোনো কিছু করতে হলে টানা অনেক দিন সেই কাজ করবে সে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, টানা এক বছর প্রতিদিন ছোট ছোট অ্যানিমেশন বানিয়ে নিজের ইচ্ছেটা অনেকখানি পূরণ করে ফেলছে যওফিশান।
শুরু থেকেই বলি গল্পটা। ২০২১ সালে বাবার কাছ থেকে নতুন ট্যাব পায় যওফিশান। নতুন ট্যাবে নতুন নতুন ব্যাপারস্যাপার। এত ব্যাপারস্যাপারের মধ্যে বাবা সাব্বির আহমেদ ট্যাবে অ্যানিমেশন বানানোর প্রাথমিক ব্যাপারটা শিখিয়ে দেন মেয়েকে। একটু একটু করে অ্যানিমেশন বানিয়ে বেশ মজা পেয়ে যায় সে। সিদ্ধান্ত নেয়, টানা এক বছর প্রতিদিন ছোট ছোট অ্যানিমেশন ভিডিও বানিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করবে যওফিশান।
প্রতিদিন স্কুলে, বাসায় যা দেখে, সে তা–ই এঁকে বানিয়ে ফেলে অ্যানিমেশন। কোনো ভিডিওর দৈর্ঘ্য ৫ সেকেন্ড, কোনোটা ১০ সেকেন্ড, কোনোটা আবার ২০ সেকেন্ড। ছোট ছোট এই ভিডিও বুঝতে অবশ্য তোমার একটু সময় লাগবে। কারণ, ছোট্ট যওফিশানের জগৎটা খুব অদ্ভুত। প্রজাপতি থেকে শুরু করে দুই বন্ধুর মারামারি—সবই পাওয়া যায় তার ভিডিওতে।
বিশেষ বিশেষ দিনে মা বুশরা আহমেদের সাহায্য নেয় যওফিশান। মায়ের আইডিয়া থেকে বানিয়ে ফেলে ছোট্ট কোনো অ্যানিমেশন ভিডিও। বাবাও আইডিয়া দেন মাঝেমধ্যে সাধারণত প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে এঁকে রাতের আগে আগে ভিডিও আপলোড করে দেয় সে। তবে অসুস্থতা কিংবা অন্য সমস্যা হলে সময়ের একটু এদিক–ওদিক হয়। গত এক বছরে এক দিনও অ্যানিমেশন বানানো বন্ধ রাখেনি যওফিশান। কোথাও বেড়াতে গেলে প্রিয় ট্যাবটা সঙ্গে নিয়ে নেয় সে।
গত বছরের ২৩ জুলাই নিজের চ্যানেলে প্রথম ভিডিও আপলোড করেছিল যওফিশান। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো প্রতিদিন অ্যানিমেশন ভিডিও বানিয়ে যাচ্ছে সে। যওফিশানের নতুন লক্ষ্য প্রতিদিনের এই ভিডিও বানানোর কাজটা এক হাজার দিন পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়া।
শুধু অ্যানিমেশন নয়, কাগজেও আঁকতে ভালোবাসে যওফিশান। এ ছাড়া গান শুনতেও খুব পছন্দ করে সে। বিভিন্ন ধরনের গান নিয়ে আগ্রহ তার। খুব আগ্রহ নিয়ে যওফিশানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম বড় হয়ে কী হতে চায় সে। চিন্তাভাবনা ছাড়াই উত্তর দেয়, ‘আপাতত এক হাজার দিন অ্যানিমেশন আঁকতে চাই। বাকিটা পরে।’