আমরা একটা গ্রহে বাস করি। পৃথিবী। আমাদের কাছে একে সবুজ-শ্যামল গ্রহ মনে হলেও মহাকাশ থেকে একে নীল দেখায়। সৌরজগতের আরও সাতটি গ্রহের মধ্যে এটি একটি। বৃহস্পতি বা শনি গ্রহের সঙ্গে তুলনা করলে মাঝারি আকারের গ্রহ পৃথিবী। গ্রহটি সূর্য নামের একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। মহাবিশ্বের কোটি কোটি নক্ষত্রের মধ্যে সাধারণ একটি নক্ষত্র হলো এই সূর্য। এমন ছোট-বড় আরও অনেক নক্ষত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের মিল্কিওয়ে নামের গ্যালাক্সি। মহাবিশ্বের আরও কোটি কোটি ছায়াপথের মধ্যে একটি এই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ভেতর ছড়িয়ে আছে আমাদের এই ছায়াপথ। আরেকভাবেও বিষয়টি দেখা যায়, আমরা বলের মতো গোলাকার বিশালাকার একটা বস্তুর ওপর বসবাস করি।
আসলে পৃথিবী যে গোলাকার, তা সাধারণ চর্মচক্ষে বোঝা সহজ কর্ম নয়; বরং স্বাভাবিকভাবে আমাদের গ্রহটিকে সমতল বলেই মনে হয়। পৃথিবীর গোলীয় রূপটি বোঝার জন্য বিশেষ জ্ঞান বা বিজ্ঞানের দরকার। আমাদের পায়ের তলায় সব সময় ভূপৃষ্ঠ আর মাথার ওপর সব সময় আকাশ দেখা যায়। একেকটি মহাদেশ আসলে অনেক বড়সড় দ্বীপ বললেও ভুল হয় না। সে কারণে যেদিকে দুই চোখ যায়, মনে হয় একটানা হাঁটা শুরু করলে একসময় সাগর বা মহাসাগরের মুখোমুখি হই আমরা। সাগর বা মহাসাগরের দিকে তাকালে দিগন্তরেখায় আকাশকে সাগরের পানিতে নেমে যেতে দেখা যায়। ওখানে আকাশকেও বেশ সমতল মনে হয় আমাদের চোখে। তাতে বাহ্যত আমাদের ধারণা হতে পারে, অনেক দূর পর্যন্ত সাগর পেরিয়ে গেলে একসময় হয়তো পৃথিবীর কিনারায় পৌঁছে যাওয়া যাবে।
আকাশ পর্যবেক্ষণের কাজটা শুরু হয়েছিল হাজার হাজার বছর আগে। প্রাচীনকালের সেই আদি আকাশ পর্যবেক্ষকেরা বিশ্বাস করতেন, পৃথিবী হলো বিশাল এক মহাসাগরের ভেতর জেগে থাকা এক টুকরা দ্বীপের মতো। অন্যদিকে আকাশ হলো বিশালাকৃতির গোলাকার এক গম্বুজের মতো কিছু একটা। এই গম্বুজ আবার প্রতিদিন প্রতিক্ষণে আমাদের মাথার ওপর দিয়ে ঘুরছে। শুধু তা–ই নয়, গম্বুজের অর্ধেক নীল রঙের আর বাকি অর্ধেক কালো রঙের। নীল অংশে থাকে সূর্য এবং কালো অংশে থাকে চাঁদ আর লাখো নক্ষত্র।
মহাবিশ্বের এ ধরনের মডেল তোমার কাছে বোধগম্য হয়ে উঠবে যদি তুমি বিশ্বটাকে আমরা কীভাবে দেখি, তা চিন্তা করে দেখো। আসল কথা হলো, মানুষ হিসেবে আমরা সীমাবদ্ধ। কারণ নিজেদের কাছ থেকে খুব বেশি দূরে দেখার ক্ষমতা নেই আমাদের। আবার গোটা পৃথিবীর সঙ্গে তুলনা করলে আমরা আক্ষরিক অর্থেই পুঁচকে একটা প্রাণী। আর বিশাল একটা গোলাকার বলের ওপর এ রকম পুঁচকে দোপেয়ে প্রাণীর চোখে বলটিকে সমতল বলে মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
তবে এটাও সত্য, মানুষ হিসেবে আমাদের পঞ্চেন্দ্রিয়ের অনেক সীমাবদ্ধতাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছি নানা উপায়ে। বিশেষ করে যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে। সৌভাগ্য যে অনেক কাল আগে থেকে আমরা সাগর-মহাসাগর পাড়ি দিতে শিখেছিলাম। ফলে একসময় বুঝতে পেরেছি, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে যাত্রা শুরু করে নাক বরাবর চলতে থাকলে একসময় আবার যাত্রা শুরুর জায়গাতেই ফিরে আসা যায়। এ জ্ঞান আমাদের বুঝতে শিখিয়েছে, পৃথিবীর আকৃতি গোল। আবার এর আগে কিছু প্রাকৃতিক ঘটনাও পৃথিবী গোলাকার বলে প্রমাণ জুগিয়েছে। তেমনই একটি প্রাকৃতিক ঘটনা চন্দ্রগ্রহণ। চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়া চাঁদের পৃষ্ঠে পড়ে। সে ছায়া গোলাকারই দেখা যায়। আরও অনেক পরে বিমানে চড়ে আমরা আকাশে উড়তেও শিখেছি। রকেটে চড়ে পৃথিবীকে পেছনে ফেলে মহাশূন্যেও পাড়ি দিয়েছি। মহাকাশ থেকে স্বচক্ষে আমাদের ছোট্ট সুন্দর গ্রহটি আসলেই একটা বলের মতোই দেখা যায়।
পৃথিবীর গোলাকার হওয়ার পক্ষে এত সব বৈজ্ঞানিক প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এখনো একদল লোক সমতল পৃথিবীতেই বিশ্বাস করে। ফ্ল্যাট আর্থ সোসাইটির সদস্যরা বিশ্বাস করেন, আমাদের পৃথিবীর আকৃতি হলো প্যানকেকের মতো। আর এই প্যানকেকের চারপাশে সাগর-মহাসাগরগুলো অবস্থিত। পৃথিবী সম্পর্কে আদিম বা প্রাচীনকালের ধারণার সঙ্গে এই মতের বেশ মিল আছে। সেকালে ধারণাগুলো গড়ে উঠেছিল স্রেফ আমাদের দুই চোখের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু কেবল এই ইন্দ্রিয় ব্যবহার করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অনেক কিছুই ঠিকমতো বোঝা যায় না। বিজ্ঞানের কাছে রয়েছে আরেক প্রস্থ চোখ। সেই চোখ দিয়ে আমরা সমতল দিগন্ত ছাড়িয়ে, এমনকি মহাকাশ ছাড়িয়েও দেখতে সক্ষম। সেই চোখে পৃথিবীর দিকে তাকালে দেখা যায়, ফুটকি ফুটকি আলোর কালচে এক পটভূমিতে ভেসে বেড়াচ্ছে আমাদের চমৎকার সুন্দর নীল বলের মতো পৃথিবী। কিন্তু সৌরপরিবারে কিংবা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে পৃথিবীর অবস্থানটা কেমন?
ছায়াপথে আমাদের অবস্থানটি উপলব্ধি করতে স্কেল মডেল কাজে লাগতে পারে। অনেক বড় কোনো জিনিসকে ভালোভাবে বোঝার জন্য স্কেল মডেল বেশ ভালো একটি পদ্ধতি। ভৌত কোনো বস্তুকে পরোক্ষভাবে পরীক্ষা করতে বিজ্ঞানে হরহামেশাই এটি ব্যবহার করা হয়। যাহোক, নিজের জন্য যদি এ রকম একটা মডেল বানাতে চাও, তাহলে রান্নাঘরের জিনিসপত্র দিয়েই সেটি বানিয়ে ফেলা সম্ভব। সে জন্য একটা আঙুর খুঁজে নিতে হবে। সেই সঙ্গে কিছু শর্ষে বা মসুর ডাল, কেক বানানোর জন্য ব্যবহৃত কিছু স্প্রিঙ্কলস আর কিছু গোলাকার ক্যান্ডি হলেই হবে।
সবকিছু খুঁজে পেলে বাসার পাশে কোনো মাঠে চলে যাও (যদি থাকে)। আঙুর আর খুদে স্প্রিঙ্কলসের মধ্যে আকৃতিগত যে পার্থক্য, তার সঙ্গে সূর্য আর পৃথিবীর আকৃতিগত দিক দিয়ে বেশ মিল আছে। মাঠের কেন্দ্রে আঙুরটা বসাও। আমাদের সৌরপরিবারের সূর্যের প্রতিনিধিত্ব করবে এটি। সূর্য থেকে আমাদের সৌরপরিবারের সদস্য গ্রহগুলোর দূরত্ব আমরা পদক্ষেপ দিয়ে মাপব। আঙুরের অবস্থান থেকে ১০ ধাপ পার হলে পাওয়া যায় বুধ গ্রহ। মানুষের পায়ের এক ধাপ বা কদমের দৈর্ঘ্য মোটামুটি ৩৬ ইঞ্চি (এক গজ বা এক মিটারের একটু কম) বা তার কম। সূর্য থেকে বুধের দূরত্ব প্রায় ৩৬ মিলিয়ন মাইল (৫৭ মিলিয়ন কিলোমিটার)। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, একেকটি পদক্ষেপ বা ধাপে তুমি প্রায় ৩৬ লাখ মাইল পথ পাড়ি দিচ্ছ। বুধ গ্রহ থেকে আরও ৯ পা এগিয়ে গেলে পাবে রূপের রানি ভেনাস বা শুক্র গ্রহকে। বাস্তবে গ্রহ হলেও শুকতারা বা সন্ধ্যাতারা নামেও এর বেশ খ্যাতি আছে। আরও ৭ পা এগিয়ে গিয়ে আরেকটি খুদে স্প্রিঙ্কলস রাখো। হ্যাঁ, এটাই আমাদের প্রিয় জন্ম ও বাসস্থান পৃথিবী।
পৃথিবী থেকে আরও ১৪ পা এগিয়ে গেলে পাওয়া যাবে মঙ্গল গ্রহের ঠিকানা। সেখানেও একটা খুদে স্প্রিঙ্কলস রাখো। সূর্য থেকে এই লালচে গ্রহটি পর্যন্ত আসতে তুমি মাঠের মধ্যে মাত্র ৪০ কদম দূরত্ব পার হয়েছ। কিন্তু সত্যিকার অর্থে ইতিমধ্যে দূরত্ব ১৪১ মিলিয়ন মাইল (প্রায় ২২৭ মিলিয়ন কিলোমিটার) পেরিয়ে এসেছ তুমি।
এরপর রয়েছে গ্রহরাজ বৃহস্পতি। তার নাগাল পেতে হলে আরও ৯৫ পা হাঁটতে হবে। এত বড় মাঠ আশপাশে পাবে কি না, সন্দেহ আছে। অন্তত ঢাকা শহরে পাওয়া বেশ মুশকিলই হবে। তাই ঢাকাবাসীর প্রতি বাকিগুলো মনে মনে কল্পনা করার পরামর্শ রইল। তবে ঢাকার বাইরে গেলে বড় মাঠ এখনো মিলতে পারে। আর শনি গ্রহ পর্যন্ত পৌঁছাতে পাড়ি দিতে হবে আরও ১১২ কদম। সেখান থেকে ইউরেনাসে যেতে হবে আরও ২৪৯ কদম। নেপচুনের জন্য আরও ২৮১ কদম এবং সদ্য গ্রহতালিকা থেকে বহিষ্কৃত প্লুটোর জন্য আরও ২৪২ কদম হাঁটতে হবে। মানে আমাদের আঙুর মডেলের সূর্য থেকে প্লুটো পর্যন্ত আসতে তোমাকে হাঁটতে হবে মোট ১ হাজার ১৯ কদম। এ দূরত্ব আধা মাইলের বেশি।
প্লুটো ছাড়িয়ে আমরা যদি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র আলফা সেন্টারাইতে যেতে চাই, তাহলে কিন্তু হাঁটতে হাঁটতে পা ব্যথা হয়ে যাবে। কারণ, প্রতিবেশী এই নক্ষত্রে পৌঁছাতে পাড়ি দিতে হবে ৭১৩,০৫৫,৫৫৫,৫৫৫,৫৫৬ কদম। মানে প্রায় চার হাজার মাইল পথ। আমাদের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ পর্যন্ত দূরত্ব।
তোমার আঙুর সৌরজগৎ মডেলে পৃথিবীসহ সূর্য স্থির। কিন্তু আদতে মহাকাশের কোনো কিছুই স্থির বা নিশ্চল নয়। পৃথিবীও সব সময় ঘুরছে। এ গ্রহের ঘোরাঘুরিও ঘটে সাতটি ভিন্ন ভিন্নভাবে। প্রথমত, পৃথিবী প্রতিদিন (প্রায় ২৪ ঘণ্টায়) একবার ৩৬০ ডিগ্রি পাক খাচ্ছে। এর মানে হলো, পৃথিবী তোমাকেসহ সবাইকে পিঠে নিয়ে নাগরদোলার মতো ঘুরছে। তুমি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকো না কেন, পৃথিবীর কেন্দ্রের চারপাশে বেশ দ্রুতবেগে ঘুরছ। তুমি যদি বিষুবরেখা বরাবর থাকো, তাহলে প্রতি ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৭ মাইল (১ হাজার ৬৭০ কিলোমিটার) বেগে মহাকাশে ছুটছ। বাংলাদেশ থেকেও সব সময় এই বেগে ছুটছি আমরা। আধুনিক যুগের সুপারসনিক জেট ফাইটারগুলো এ গতিতে ছুটে বেড়াতে পারে। কিন্তু সেই গতি কী বুঝতে পারছ? অন্যদিকে বিষুবরেখা থেকে যত মেরুর দিকে যেতে থাকবে, তোমার ছোটার গতিও তত কমতে থাকবে। সেই হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডার দিকে গেলে তোমার বেগ নেমে দাঁড়াবে ঘণ্টায় প্রায় ৫০০ মাইল (৮০০ কিমি)। মোটামুটি একটা জেট লাইনারের মতো গতি।
আবার বিশাল একটা মাথা ওপর-নিচ করার মতো পৃথিবী খুব ধীরে ধীরে ওঠানামা করছে। যেন কোনো প্রশ্নের উত্তরে পৃথিবী মহাকাশের কোনো আগন্তুককে ‘হ্যাঁ’ বলতে চায়। আসলে প্রতি মাসেই আমাদের অজান্তে এ ঘটনা ঘটছে। আর এসব ঘটছে পৃথিবীর চারপাশে বিশেষ কোণে চাঁদের ঘূর্ণন এবং পৃথিবীর ওপর চাঁদের মহাকর্ষ টানের কারণে।
সূর্যের চারপাশে প্রতিবছর এক পাক ঘুরে আসে পৃথিবী। এ ঘূর্ণনগতি ঘণ্টায় প্রায় ৬৭ হাজার মাইল (প্রায় ১ লাখ কিলোমিটার), অর্থাৎ সেকেন্ডে প্রায় ১৮ মাইল (৩০ কিলোমিটার)। বেশির ভাগ রকেটের গতিই এর চেয়ে অনেক কম।
পৃথিবী যেমন সূর্যের চারপাশে প্রতিনিয়ত ঘুরছে, সূর্যও তেমনি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরছে। সূর্যের গতি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১০ লাখ কিলোমিটার (প্রায় ৬ লাখ মাইল)। তারপরও আমাদের ছায়াপথের চারপাশে পৃথিবীসহ অন্য গ্রহগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যকে এক পাক ঘুরে আসতে সময় লাগে ২৫০ মিলিয়ন বছর। এর আগে ছায়াপথের এ প্রান্তে আমাদের পৃথিবী যখন এসেছিল, তখন ডাইনোসরদের বিলুপ্তি ঘটেছিল।
আরও প্রায় ৫০টি ছায়াপথ নিয়ে গঠিত ছোট্ট একটা গ্রুপের সদস্য আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। এরা পরস্পরের চারপাশে ঘুরছে। আমাদের এই স্থানীয় ছায়াপথের গ্রুপটির মতো আরও কোটি কোটি ছায়াপথ মহাবিশ্বে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে। মহাবিশ্ব প্রতিমুহূর্তে ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে। এই সবকিছুই আমাদের মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার আগে শেষ কথাটি শুনে যাও। কয়েক হাজার বছর ধরে অসংখ্য অনুসন্ধানী মানুষের ধারাবাহিক আকাশ পর্যবেক্ষণ, টেলিস্কোপ, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং মহাকাশ ভ্রমণের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত আমাদের মহাজাগতিক ঠিকানা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। আর মহাবিশ্বে আমাদের এই অবস্থান সম্পর্কে জানা বিশ্বজগৎ সম্পর্কে নানা প্রশ্নের উত্তর জুগিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও অনেক রহস্য উদ্ঘাটিত হবে, মিলবে আরও অনেক প্রশ্নের জবাব। তবে তোমার এ ঠিকানায় খুব শিগগির কোনো এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রতিবেশীর কাছ থেকে চিঠি বা এসএমএস পাওয়ার আশা না করাই ভালো।