বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ছোট নোট

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে কাবি পারসন নামের এক বিচিত্র লোকের দেখা মিলল। অন্য সবার থেকে তাঁর সাজসজ্জা আলাদা। শরীরে পোশাকে গেঁথে রাখা আছে নানান অঙ্কের ডলার। ১ থেকে ১০০ ডলারের নোট, সবই আছে। ছোট্ট একটা নোটে লেখা আছে, ‘যার যা দরকার নিয়ে নিন’। কাবি পারসন গায়ে টাকা গেঁথে হেঁটে চললেন নিউইয়র্কের রাস্তায়।

আমেরিকান ‍নিউজ ওয়েবসাইট হাফ পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কে কাবি পারসনের অভিনব এই পরীক্ষা শেষে দেখা গেল, যাঁর দরকার কম, তিনিই নিয়েছেন সবচেয়ে বেশি অঙ্কের নোট। আর যাঁর দরকার বেশি, যেমন গৃহহীন মানুষ, তাঁরা নিয়েছেন সবচেয়ে কম মূল্যমানের নোট।

নোট প্রচলনের শুরু থেকেই এর প্রতি মানুষের তুমুল আগ্রহ। রং, নকশা, আকৃতি, মূল্যমান নিয়ে সব সমাজেই আগ্রহ দেখা গেছে। আজ থেকে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ বছর আগে প্রথম মুদ্রার প্রচলন ঘটিয়েছিল সুমেরীয়রা। নানান চিত্রকর্ম আঁকা মাটির কয়েন দিয়ে হয়েছিল এর সূত্রপাত। যতদূর জানা যায়, ৬০৮ থেকে ৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম মুদ্রিত নোটের ব্যবহার শুরু হয় চীনে। ১৪৫৫ সালে সংঘটিত মুদ্রাস্ফীতির আগপর্যন্ত এই নোট বেশ ভালোভাবেই কাজ করছিল।

প্রাচীন ভারতে মুদ্রার প্রথম প্রচলন ঘটেছিল খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে। এই মুদ্রাগুলো ‘পুরাণ’, ‘কাশর্পনা’ বা ‘পানা’ নামে পরিচিত ছিল। এই মুদ্রাগুলো ছিল ভিন্ন ভিন্ন আকৃতি ও ওজনের। এগুলোর বেশির ভাগই ছিল রুপার তৈরি। পরে দিল্লির সুলতানরা ক্যালিগ্রাফিনির্ভর স্বর্ণ, রৌপ্য ও তামার মুদ্রার প্রচলন ঘটান, যা বহুল পরিচিত ছিল ‘তাঙ্কা’ নামে।

আরও পড়ুন

মাটি, পাথর, কড়ি, ধাতুসহ নানান মাধ্যমের পথ পাড়ি দিয়ে আমরা পেয়েছি আজকের এই কাগজের নোট। শুরুর দিকে নোটগুলো ছাপা হতো গাছের বাকলে। আমরা সত্যিকারের কাগজের মুদ্রা পাই ৯৬০ সালের দিকে, যা পরিচিত ছিল ‘জিয়াওজি’ নামে। তবে আকারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাগুজে নোটের রেকর্ডটি ফিলিপাইনের দখলে। ১৯৯৮ সালে ফিলিপাইনের সরকারি কর্মকর্তারা ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে স্প্যানিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই নোটের প্রচলন ঘটান। এই নোটে মূল্যমান ১ লাখ পেসো। এর এক পাশে রয়েছে স্বাধীনতাসংগ্রামের চিত্র, আর অপর পাশে রয়েছে স্বাধীন ফিলিপাইনের পতাকা হাতে একটি ছবি। এটি দৈর্ঘ্যে ৩৫৫ মিলিমিটার ও প্রস্থে ২১৫ দশমিক ৯ মিলিমিটার, যা কিনা আকারে একটি এ-ফোর কাগজের মতো!

গিনেস ওয়ার্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, রোমানিয়ার ১০ বানি নোটটি হচ্ছে পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম নোট, যার দৈর্ঘ্য ২৩৩ মিলিমিটার ও প্রস্থ ২৭ মিলিমিটার। এ নোটের আকার বর্তমানে ১ মার্কিন ডলারের প্রায় এক-দশমাংশের সমান।

আরও পড়ুন