হাই! আমি ড্রোগো। জানি, ঘন লোমওয়ালা ছোট্ট ছোট্ট কুকুর আর বিড়ালছানা খুব পছন্দ করো তোমরা। দেখলেই কোলে তুলে নাও। আমার তো তেমন কিছু নেই, আছে কাঁটাভরা পিঠ, আর বাঁকা দাঁত। আমাকে তোমাদের ভালো লাগবে কি না তা না ভেবেই আমাকে এঁকেছিল যমজ দুই ভাই মানিক আর রতন।
বললে হয়তো বিশ্বাস করবে না, দুজন অবিকল এক রকম দেখতে। এই যে আমি সারা দিন তাদের কোলে কোলে ঘুরি, আমাকে নিয়ে দুজনের কত টানাটানি—সেই আমি পর্যন্ত আলাদা করতে পারি না কোনটা মানিক আর কোনটা রতন! যমজ বলে কথা!
তবে চিনতে পারি আর না পারি, আমার ভাই দিন শেষে আচ্ছামতো দুষ্টুমি করা, পেট পুরে খাওয়ার পর নরম জায়গা পেয়ে ঘুমাতে পারলেই হলো।
সারা দিন মানিক-রতনের হাতে শুয়ে-বসে থাকতে দেখা যায় তাকে। দুষ্টুমি তো করি একটু আধটু, তবে চাইলে কাপকেক কিংবা ওরিও দিয়ে খুব সহজেই বশ করা যায় আমাকে।
আগে আমাকে দেখা যেত পিন্টারেস্ট নামের একটা সাইটে। সেখানে আবার আমার অনেক ভক্ত। একদিন ফেসবুকের স্টিকার প্যাক প্রোগ্রামও আমার ভক্ত হয়ে গেল। ২০১৭ সালে বার্তা পাঠাল ড্রোগো আঁকিয়েদের কাছে। তারা চায়, ফেসবুকের চ্যাটবক্সগুলোও যেন ভরে ওঠে আমার দুষ্টুমিতে। যেই চিন্তা, সেই কাজ! আমি পৌঁছে গেলাম ফেসবুকের স্টিকার প্রোগ্রামে। ২০১৮ সাল থেকেই আমার সঙ্গে সারা দিন খেলা যায় ফেসবুকের মেসেঞ্জার আর কমেন্ট বক্সে। এখন ড্রোগো শুধু মানিক-রতন নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা অসংখ্য মানুষের প্রিয় পোষা প্রাণী।
ছি ছি! ফ্লোর পেয়ে শুধু আমার কথাই বলছি। আসলে যাঁদের জন্য আমি এত বিখ্যাত, সেই মানিক ও রতনের কথা না বললে কি চলে? দীর্ঘদিন ধরে কার্টুন আঁকছেন এই যমজ ভাই। প্রথম আলোর ফান ম্যাগাজিন আলপিন, রসআলোতে নিশ্চয়ই দেখেছ তাঁদের আঁকা। এ ছাড়া নানা ধরনের অ্যানিমেশন নিয়ে দিনরাত পড়ে থাকেন তাঁরা। এই দুই ভাই-ই প্রথম বাংলাদেশি কার্টুনিস্ট, যাঁদের আঁকা কার্টুন চরিত্র স্থান পেল ফেসবুকে। ফেসবুকের এই বিশেষ স্টিকার প্রোগ্রাম দল বেশ নিখুঁতভাবে ফেসবুক পেজগুলোর আঁকিয়েদের লক্ষ করে। তারা নিজ হাতে বিশেষ কয়েকজন আঁকিয়ের এবং তাঁদের আঁকা চরিত্রগুলো বেছে নেয়। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নিঃসন্দেহে এটা একটা বড় অর্জন। তাঁদের জন্য এসো সবাই মিলে হাততালি দিই।