ইন্টারনেটে কোনো কিছু সার্চ করতে গেলে আমাদের প্রায়ই ক্যাপচা টেস্টের বাধা অতিক্রম করতে হয়। ‘আই এম নট আ রোবট’ লেখা একটি টেস্টের মাধ্যমে আমরা যে সত্যি মানুষ, এটা প্রমাণ করতে হয়। কখনো এক ধাপেই এই পরীক্ষা পার হয়ে যাওয়া সম্ভব হয়, আবার কখনো ৩ থেকে ৪ ধাপের কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু কে জানত, ‘আমি রোবট নই’ প্রমাণ করতে একদিন ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গকেও এই পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে, তা–ও আবার সবার সামনে!
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই অভাবনীয় ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কম্পিউটারবিজ্ঞানী লেক্স ফ্রিডম্যান তাঁর নিজস্ব পডকাস্টে জাকারবার্গকে ট্রাফিক বাতি চিহ্নিত করার জন্য একটি কাগজ দেন। এবং বলেন, ‘সব কটি ট্রাফিক লাইট চিহ্নিত করুন।’ জাকারবার্গ ক্যাপচা টেস্টে উত্তীর্ণ হলেও, ঘটনাটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে হাস্যরসের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় জাকারবার্গ এবং ক্যাপচা টেস্ট নিয়ে মজার মিম শেয়ার করছে নিজেদের প্রোফাইলে। ক্যাপচা টেস্টের পরই শুরু হয় লেক্স ফ্রিডম্যান পডকাস্টের ২৬৭তম পর্ব।
ক্যাপচা টেস্ট মূলত মানুষ এবং মেশিন এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু যখন মার্ক জাকারবার্গের মতো একজন বিখ্যাত ব্যক্তিও এই পরীক্ষার সম্মুখীন হন, তখন অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন: আমরা কি সত্যিই মেশিন থেকে আলাদা? এই প্রশ্ন বেশ জটিল এবং এর কোনো সহজ উত্তর নেই। সম্পূর্ণ পডকাস্ট জুড়ে লেক্স ফ্রিডম্যান এবং মার্ক জাকারবার্গ এই জটিল প্রযুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আসে ফেসবুকের বিরুদ্ধে। মার্কিন সিনেটের প্রায় ১০০ জন সদস্য ১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন জাকারবার্গকে। কিন্তু ফেসবুকের এর প্রতিষ্ঠাতা অবিচল ছিলেন। তাঁর ভাবভঙ্গি এবং প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ধরন দেখে মার্কিন মিডিয়ার এক ভাগ প্রশ্ন তুলেছিল: এটি কি সত্যিই জাকারবার্গ নাকি তাঁর রোবট প্রতিনিধি? জাকারবার্গর এই অস্বাভাবিক শারীরিক ভাষা বিশ্লেষণ করেই নেটদুনিয়ার একাংশ তাঁকে রোবট বলে অভিহিত করেছিল সে সময়। অনেকে টুইটারে লিখেছিল, ফেসবুকের সদর দপ্তরে বসে জাকারবার্গ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তাঁরই মতো দেখতে এক রোবটকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পাঠিয়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই জনপ্রিয় পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যান তাঁর দর্শকদের উদ্দেশে জাকারবার্গ নিয়ে কিছু মজা করেছিলেন। তাঁর পডকাস্টে তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রের নামকরা ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেন এবং বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, দর্শন, সংস্কৃতি এবং মানব অবস্থার মতো বিষয়গুলো নিয়ে গভীর আলোচনা করেন।
পডকাস্টের শেষের দিকে, আলোচনায় উঠে আসে যে ভবিষ্যতে কী হবে, তা আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না। কিন্তু একটি বিষয় নিশ্চিত: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকবে। এই প্রযুক্তির সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নৈতিকভাবে এবং দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করা হয়।
মজা করে এই রোবট টেস্ট করে দেখানো হয়, জাকারবার্গ মানুষ, রোবট নন।