মাথায় নীল রুমাল বাঁধা একজন মানুষের ছবি (নিচে)। ফেটে গেছে। দেখে মনে হয়, নব্বই দশকের কোনো কম্পিউটারে ডিজাইন করা। ছবিটার নাম ‘ক্রিপ্টোপাঙ্ক #৫৮২২’। চাইলে তুমি এখনই মুঠোফোন বা কম্পিউটারে যেকোনো ফ্রি সফটওয়্যার বা অ্যাপ দিয়ে কয়েক মিনিটেই এ রকম একটা ছবি হুবহু বানিয়ে ফেলতে পারবে। বা এঁকে নিতে পারবে। যেমন অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটরে (এটা অবশ্য ফ্রি না, তবে সবার পরিচিত) চাইলেই এ রকম ছবি বানানো যায়। সে ছবি অবশ্য দেখতে এত খারাপ দেখাবে না। এ রকম ফাটা ছবি বানাতে চাইলে ইচ্ছে করে খারাপ রেজল্যুশনে আঁকতে হবে। এত কষ্ট করতে না চাইলে মাত্র কয়েক সেকেন্ডে গুগলে সার্চ করে এই ছবিটি তুমি ডাউনলোড করে নিতে পারো। ফ্রি। চাইলে মুহূর্তের মধ্যে সেটাকে ফোনের ওয়ালপেপারও বানিয়ে ফেলতে পারো। প্রিন্ট করে দেয়ালেও টাঙিয়ে রাখতে পারবে চাইলে। হোয়াটসঅ্যাপে বা মেসেঞ্জারে পাঠাতে পারো বন্ধুদের। কিংবা ফেসবুকে আপলোড করে দিতে পারো প্রোফাইল পিকচার হিসেবে।
এই অতিসাধারণ—চাইলেই ফ্রিতে ডাউনলোড করা যায়, এই ডিজিটাল ছবিটির দাম কত হতে পারে, আন্দাজ করতে পারো? উদার মনে একটু বাড়িয়ে-চাড়িয়ে হিসাব করেও তুমি সম্ভবত হাজার বা লাখের ঘর পেরোতে পারোনি। বলা বাহুল্য, তোমার এই আন্দাজ ভুল। লার্ভা ল্যাবসের তৈরি এই আর্টটি এ বছরই বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৪ মিলিয়ন ডলার বা ২৫০ কোটি টাকায়!
ঢোঁক গিলে নিয়ে একটু থামো। ভাবতে অবাক লাগছে? আরও বড় চমক আছে তোমার জন্য।
‘দ্য মার্জ’ নামের এই সাদা–কালো ডিজিটাল আর্ট কালেকশনটি গত ডিসেম্বরে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৯২ মিলিয়ন ডলারে! টাকায় এর দাম আসে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বাস হয়?
আপাতদৃষ্টে এমন সাদামাটা ছবির এ রকম প্রচণ্ড বাজারমূল্য দেখে আশ্চর্য না হওয়াই অস্বাভাবিক। তবে এ তথ্যগুলো নির্ভুল। বাস্তব। এমন আকাশচুম্বী চড়া দামে বিক্রি হওয়ায় এবং অ্যাডিডাস, স্যামসাং, কোকাকোলা, নাইকির মতো বড় কোম্পানির বিনিয়োগের খাতায় থাকায় এনএফটি (NFT) শব্দটি প্রায় দুই বছর ধরে ইন্টারনেটে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন হলো, এই এনএফটি আসলে কী?
সাধারণত মূলধারার সংবাদমাধ্যমে এনএফটি বলতে দেখা যায় বিভিন্ন ডিজিটাল আর্ট। তাই মনে হওয়া স্বাভাবিক, এনএফটি বলতে বুঝি শুধু ডিজিটাল আর্টকেই বোঝায়। এ ধারণাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়।
সহজ ভাষায়, এনএফটি বা নন–ফাঞ্জিবল টোকেন (Non-Fungible Token) হলো অবিনিময়যোগ্য টোকেন। যে টোকেনে থাকে ইউনিক ব্লকচেইন। ব্লকচেইন মানে, সহজ করে বললে, একধরনের ডিজিটাল কোড। এই ইউনিক বা অনন্য ডিজিটাল কোড–সংবলিত টোকেন ও টোকেনের সঙ্গে থাকা ডিজিটাল বা ফিজিক্যাল অ্যাসেটকে (যেকোনো বস্তু) বলা হয় এনএফটি।
আরেকটু সহজ করে বলি। নন-ফাঞ্জিবল টোকেন হলো যা ফাঞ্জিবল বা বিনিময়যোগ্য নয়। বিষয়টা বোঝার জন্য আসো, আগে বুঝে নিই, বিনিময়যোগ্যতা কী। এর সবচেয়ে সরল উদাহরণ হলো বাজারে প্রচলিত মুদ্রা বা ব্যাংক নোট। ধরো তুমি লোকাল বাসে করে কোথাও যাচ্ছ। এখন বাসের কন্ডাক্টরকে ২০ টাকা বাসভাড়া দেওয়ার জন্য পকেট থেকে ২০ টাকার একটি নোট অথবা ১০ টাকার দুটি নোট, এমনকি ৫০ টাকার একটি নোট দিয়ে বাকি ৩০ টাকা ফেরত নিয়েও তুমি ভাড়া পরিশোধ করতে পারবে। সব ক্ষেত্রেই তুমি সেই ২০ টাকাই পরিশোধ করছ। অর্থাৎ তোমার কাছে থাকা ২০ টাকার নোট, দুটি ১০ টাকার নোট ও ৫০ টাকা দিয়ে ৩০ টাকা ফেরত নেওয়া—এ সবই একে অপরের সঙ্গে পরিবর্তনযোগ্য। বা বিনিময়যোগ্য। এটাই বিনিময়যোগ্যতা বা ফাঞ্জিবিলিটি।
নন-ফাঞ্জিবিলিটি ঠিক এর উল্টো। ব্যাংক নোট যেমন একে অপরের সঙ্গে পরিবর্তন বা বিনিময় করে নেওয়া যায়, নন ফাঞ্জিবল জিনিসগুলো এভাবে একে অন্যের সঙ্গে বিনিময় বা পরিবর্তন করা যায় না। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ বিখ্যাত চিত্রকর্মগুলো। এগুলোর মূল কপি পৃথিবীতে একটিই আছে।
লেওনার্দো দা ভিঞ্চির জনপ্রিয় চিত্রকর্ম ‘মোনালিসা’ কে না চেনে। এর অসংখ্য হাতে আঁকা কপি ও ডিজিটাল প্রিন্ট বাজারে পাওয়া যায়। তবে ভিঞ্চির আঁকা মূল চিত্রকর্ম একটিই। সংরক্ষিত আছে ফ্রান্সের ল্যুভর মিউজিয়ামে। মোনালিসার যতই হুবহু কপি থাকুক না কেন, সেগুলো দিয়ে ল্যুভর মিউজিয়ামে থাকা মূল কপিটি পরিবর্তন বা বিনিময় করা যাবে না। কেননা প্রকৃত মোনালিসা ওই একটিই। এখানে মোনালিসা হলো নন–ফাঞ্জিবল অর্থাৎ অবিনিময়যোগ্য।
এনএফটির শেষ অংশ, টোকেন, এটা স্রেফ একটা ডিজিটাল কোড। ব্লকচেইনের এই কোড অপরিবর্তনযোগ্য। ব্লকচেইন কথাটা যেহেতু বারবার আসছে, সেটাও একটু সহজ করে ভেঙে বলি। আমরা যে বিভিন্ন ওয়েবসাইট চালাই, যেমন কিশোর আলোর ওয়েবসাইট—এই সাইটে যেসব তথ্য দেখা যায়, সেটা হোক, ছবি বা ভিডিও দেখা যায়, সেগুলো সব একটা জায়গায় রাখতে হয়। এর নাম সার্ভার। ব্লকচেইনও আসলে এ রকম একধরনের সার্ভার। যেখানে তথ্যগুলো শিকল বা চেইনের মতো একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত ব্লকে (পড়ো, ফাইল) রাখা আছে। এই চেইনে থাকা কোনো কোড বা তথ্য পরিবর্তন করা যায় না। তবে প্রয়োজনে লোহার শিকল বা চেইনের মতো শেষে অতিরিক্ত লুপ বা ব্লক সংযোজন করা যায়। ব্লকচেইনের এই বৈশিষ্ট্যের জন্যই এনএফটি অপরিবর্তনযোগ্য বা অবিনিময়যোগ্য হয়ে উঠেছে।
একটি এনএফটি যখন তৈরি করা হয়, তখনই ওই ব্লকচেইনে বা ডিজিটাল কোডে এনএফটিটি সৃষ্টির তথ্য, দিন, সময়, মালিকের নাম ও একটি অনন্য ডিজিটাল স্বাক্ষর সংযোজিত হয়ে যায়। যেহেতু ব্লকচেইনে থাকা তথ্য পরিবর্তন করা যায় না, তাই পরে ওই এনএফটির ডুপ্লিকেট বা কপি বানানো হলেও ব্লকচেইনে থাকা তথ্যের সঙ্গে ওই কপির তথ্য মেলে না। এভাবে আসল এনএফটির অনন্যতা রক্ষা পায়। পুরো ব্যবস্থাটি নকল বা জালপ্রতিরোধী।
পরে কখনো মূল এনএফটি অন্য কারও কাছে বিক্রি হয়ে গেলে ব্লকচেইনের সার্ভারে নতুন ব্লক বা ফাইলে নতুন কোড যুক্ত করে, তাতে নতুন মালিকানার তথ্য লিখে দিয়ে নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এভাবে প্রকৃত মালিকানা ও এনএফটির আসল হওয়ার প্রমাণ খুব সূক্ষ্মভাবে সংরক্ষিত থাকে টোকেনটিতে। এ কারণেই এনএফটিগুলো এত চড়া দামে বিক্রি হয়। কারণটা যদি স্পষ্ট না হয়, তাহলে আবারও বলি—এই চড়া মূল্যের পেছনে আছে এনএফটির অনন্যতা।
এনএফটিগুলোর এই বিরলতার সুযোগে বর্তমান বাজারে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের এনএফটি মার্কেট গড়ে উঠেছে। এই এনএফটির মার্কেটপ্লেসে বিনিয়োগ করেছে স্যামসাং, কোকাকোলা ও অ্যাডিডাসের মতো বড় কোম্পানিগুলো। মার্কিন র৵াপ সংগীত তারকা এমিনেম, কানাডিয়ান পপ তারকা জাস্টিন বিবার ও টুইটারের সাবেক সিইও জ্যাক ডরসির মতো বড় বড় নামও জড়িত আছে এনএফটির সঙ্গে। তাই এনএফটি দুই বছর ধরে কমবেশি মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সামনের সারিতেই আছে। খবর হচ্ছে একের পর এক।
তবে এখন পর্যন্ত এনএফটির বিস্তার শুধু ডিজিটাল আর্ট, ভিডিও-অডিও কনটেন্ট বা সোশ্যাল মিডিয়া ফাইলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই এনএফটি বলতে অনেকেই এই ডিজিটাল ফাইলগুলোকেই বোঝেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই এনএফটির সূচনা ও মূল উদ্দেশ্য বাস্তব জগতের অ্যাসেট বা সম্পত্তির জন্যই। তবে এসব ডিজিটাল ফাইলের মূল্যের বিষয়টিও বোঝা প্রয়োজন।
মোনালিসা বা এ রকম চিত্রকর্ম আমরা কেন কিনে সাজিয়ে রাখি? তুমি যদি মোনালিসার মূল কপিটি কেনার সুযোগ পাও আর তোমার যদি সামর্থ্য থাকে, তবে কেন কিনবে? একটি মেয়ের ছবিই তো! মোনালিসার মূল্য শুধু এর অনন্যতায়ই নয়। ভিঞ্চির খ্যাতি ছাড়াও এর মেধাগত মূল্য আছে। ডিজিটাল আর্টেরও সে রকম মূল্য থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তোমার বাসার দেয়ালে না সাজিয়ে ফেসবুকের দেয়ালে সাজিয়ে রাখাটাকে এখন হয়তো অনেক অর্থবহ মনে হচ্ছে না, তবে ভবিষ্যতে তা হতে পারে। আবার এসব ডিজিটাল আর্ট চাইলে চড়া মূল্যে বিক্রি করার বিষয়টি তো আছেই! তবু ডিজিটাল আর্ট নিয়ে বর্তমান বাজারে যা চলছে, যে আকাশছোঁয়া দাম, তাকে খানিকটা অতিরিক্ত বা অতিরঞ্জিত না বলার কোনো কারণ নেই।
এবারে বাস্তবে সম্পদের ক্ষেত্রে এনএফটির ব্যবহার নিয়ে বলি। দলিল বা যেকোনো ধরনের লিখিত বা ডিজিটাল রেকর্ড খুব সহজেই জালিয়াতি করা যায়। মূলত এ সমস্যার সমাধানের জন্যই কালার্ড কয়েন্সের সূচনা, যার বর্তমান রূপ এই এনএফটি। আগে যেমন বলেছি, কোনো সম্পত্তির মালিকানার রেকর্ড যখন ব্লকচেইনের মাধ্যমে এনএফটি হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়, তখন তা আর পরিবর্তন করা যাবে না। ফলে জালিয়াতি প্রতিহত করা সম্ভব হবে। তা ছাড়া এনএফটিগুলোর একটা ইউনিক ডিজিটাল সিগনেচার থাকে। এটা দেখে নিশ্চিতভাবে বোঝা যায়, এনএফটি–টি আসল নাকি কপি। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে বাস্তব জীবনে এনএফটির নানা রকম প্রয়োগ সম্ভব।
যেকোনো জায়গা-জমি বা সম্পত্তির স্থায়ী রেকর্ড গতানুগতিক লিখিত দলিলের পাশাপাশি একটি এনএফটি হিসেবে সংরক্ষিত থাকলে, তাতে আর জালিয়াতির সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া সব সার্টিফিকেটের সঙ্গে যদি একটি করে এনএফটি জুড়ে দেওয়া যায়, তবে সার্টিফিকেটটি আসল নাকি নকল, সেটাও বোঝা যাবে খুব সহজে। চিন্তা করো, সার্টিফিকেট বা দলিল জাল করা বন্ধ করা গেলে কত রকম অন্যায় ও সমস্যার সমাধান করে ফেলা সম্ভব!
আবার প্যাকেটজাত দ্রব্যের সঙ্গে এনএফটি ব্যবস্থার সমন্বয় করা গেলে প্রস্তুতকারক থেকে শুরু করে পণ্যটির ভোক্তা, সবাই পণ্যের গুণগত উপাদান, মান ও শেলফ লাইফ নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে। তা ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো আইডিগুলোর ভেরিফিকেশনের জন্য ব্যবহার করা যাবে এই প্রযুক্তি।
আসলে এনএফটির বাস্তব জীবনে ব্যবহার বহুমুখী। তবে এসব বাস্তবমুখী ব্যবহারের আগে অবশ্যই এনএফটিকে অতিরঞ্জিত ডিজিটাল আর্টের শিকল ছিঁড়ে বেরোতে হবে।
নব্বইয়ের দশকের শেষে ‘ডট-কম বাবল’ নামে এ রকম এক অতিরঞ্জন শুরু হয়েছিল। তখন সত্যিকার ব্যবসায়িক আইডিয়া না থাকলেও অনেকেই একটা ‘ডট-কম’ ডোমেইন, মানে ওয়েবসাইট কিনে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছিল বিশাল অঙ্কের অর্থ। এ শতাব্দীর শুরুতে এই ‘ডট-কম বাবল’ মুখ থুবড়ে পড়ে। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট অতি-উৎসাহী বা অতিরঞ্জিত ব্যবহারের যুগ পেরিয়ে আসে। পা রাখে সত্যিকার ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের যুগে। এর মাধ্যমে যে বিপ্লব ঘটেছিল, আজ আমরা তার সুফল পাচ্ছি প্রতিদিন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এনএফটির ক্ষেত্রেও এমন কিছুই ঘটবে। দ্রুতই এই ‘এনএফটি বাবল’ ক্রাশ করবে, মানে মুখ থুবড়ে পড়বে বলে অনুমান করেছেন তাঁরা। যার কিছুটা ইঙ্গিত ওসব আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হওয়া এনএফটিগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য দেখে ধারণা করা যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, পড়ে যাচ্ছে অর্থহীন ডিজিটাল এসব আর্টের দাম। এটি এনএফটির বাস্তবমুখী ব্যবহার শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিগগিরই এনএফটি এই ডিজিটাল কনটেন্টের গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তবে দরকারি কাজে ব্যবহার হবে। এতে একদিকে যেমন বন্ধ হবে ডিজিটাল ও বাস্তব জগতের নানা ধরনের জালিয়াতি, তেমনি জমিজমার খতিয়ান বা সার্টিফিকেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ দলিলের সুরক্ষা পদ্ধতিতেও যোগ হবে নতুন মাত্রা। ঘটবে ডিজিটাল ভেরিফিকেশনের বিপ্লব।
বর্তমান পৃথিবী এখন সেই বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। সেই বিপ্লবের অপেক্ষায়।