রাজশাহী, বগুড়া, রংপুরে লাইব্রেরি আছে কোথায়

রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের দোতলায় একটি বড় গ্রন্থাগার আছেপ্রথম আলো

পদ্মার তীরে রাজশাহী শহরে বরেন্দ্র জাদুঘর যাত্রা শুরু করেছিল ১৯১০ সালে। এই জাদুঘরের দোতলায় একটি বড় গ্রন্থাগার আছে। সেই আমলে ১৪ হাজার বই নিয়ে শুরু হয়েছিল গ্রন্থাগারটি। এমন অনেক বই আছে বরেন্দ্র গ্রন্থাগারে, যা দেশের আর কোথাও নেই। কয়েকটি বইয়ের নাম উল্লেখ করতে পারি। জন মিলটনের প্যারাডাইজ রিগেইনড বইটির ১৭১৩ সালে প্রকাশিত সংস্করণের একটি সংখ্যা গ্রন্থাগারটিতে আছে। বইটি স্যার যদুনাথ সরকারের পারিবারিক লাইব্রেরি থেকে সংগ্রহ করা। আছে বাংলা গদ্যসাহিত্যের প্রাণপুরুষ উইলিয়াম কেরির ইতিহাসমালার একটি কপি, যেটি ১৮১২ সালে শ্রীরামপুর মিশন ছাপাখানা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। কাঠের ব্লকে ছাপা বইটির পৃষ্ঠাসংখ্যা ৩২০। বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায়ের দুর্গেশনন্দিনীর প্রথম সংস্করণটি আছে এই গ্রন্থাগারে। বইটি ১৮৬৫ সালে কলকাতার বিদ্যারত্ন প্রেস থেকে প্রথম বেরোয়। পৃষ্ঠাসংখ্যা ৩১০ এবং মূল্য ধরা হয়েছিল এক টাকা। এ ছাড়া আরও অনেক পুরোনো বইয়ের প্রথম দিকের সংস্করণ এখানে আছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এই গ্রন্থাগারে পড়ার ব্যবস্থাও সুন্দর।

আরও পড়ুন

এবার বগুড়া ও রংপুরের গ্রন্থাগারের খবর বলি। বগুড়ার উডবার্ন লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৫৪ সালে। বহু বছর বেসরকারি লাইব্রেরি হিসেবে চালু থাকার পর ১৯৯৬ সালে এটি সরকারি হয়। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বড় ভাই শরৎ চন্দ্র বসু, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি কিরণ শংকর দাসের মতো মহান ব্যক্তি বিভিন্ন সময় এই লাইব্রেরিতে গিয়েছেন। বইয়ের সংখ্যা ৫৮ হাজার। দৈনিক পত্রিকা ১৪টি, সাপ্তাহিক ৪টি, পাক্ষিক ২টি, মাসিক ৬টি রাখা হয়। দিনে পাঠক উপস্থিতি ১৫০ থেকে ২০০ জন। এ গ্রন্থাগারে অনেক পুরোনো ও দুষ্প্রাপ্য বই ও প্রাচীন পদ্মপুরাণ, গোবিন্দ কথামৃত এবং হিরণ্যকশিপুর শীর্ষক তিন খণ্ড হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি রয়েছে।

রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যের অংশ। কখনো ভূমিকম্পে, কখনো অগ্নিকাণ্ডে এই গ্রন্থাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের আগে গ্রন্থাগারে ৩০ হাজারের বেশি বই ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতাবিরোধীরা এখানকার হাজার হাজার বই রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে। গ্রন্থাগারটি এখনো বেশ চালু আছে।

আরও পড়ুন