১২০ দিন পানির নিচে বসবাস করে বিশ্ব রেকর্ড
পানির নিচে ১২০ দিন বাস করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের নাম লিখিয়েছেন জার্মান অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার রুডিগার কোচ। রেকর্ডটি গড়তে রুডিগার কোচ পানামার উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১ মিটার বা ৩৬ ফুট নিচে একটি বিশেষ ক্যাপসুলে থেকেছেন। ক্যাপসুলটি ৩০ বর্গ মিটার বা ৩২০ বর্গফুট আয়তনের। টয়লেট, বিছানা, টিভি, ইন্টারনেট সংযোগ এবং ব্যায়াম করার জন্য সাইকেল সহ সবকিছুই ছিল ক্যাপসুলটিতে।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বিচারক সুজানা রেয়েসের উপস্থিতিতে ২৪ জানুয়ারি ৫৯ বছর বয়সী রুডিগার কোচ তাঁর ৩০ বর্গমিটারের পানির নিচের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। সুজানা জানিয়েছেন, রুডিগার কোচ আমেরিকান জোসেফ ডিরুটি আগের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। জোসেফ ডিরুটি ফ্লোরিডার একটি হ্রদের নিচে একটি আন্ডারওয়াটার লজে ১০০ দিন কাটিয়েছিলেন।
সমুদ্রের ১১ মিটার নিচে ক্যাপসুল থেকে বেরিয়ে কোচ বলেন, ‘এটি একটি দুর্দান্ত দুঃসাহসিক অভিযান ছিল আমার জীবনে। এখন এটি শেষ হয়ে যাওয়ায় কিছুটা খারাপ লাগছে। আমি এখানে আমার সময়টা খুব উপভোগ করেছি।’
ক্যাপসুলটিতে সমুদ্র দেখার জন্য গোল জানালা ছিল, যাকে পোর্টহোল বলা হয়। কোচ পোর্টহোল দিয়ে দেখা সমুদ্র সম্পর্কে বলেন, ‘যখন সবকিছু শান্ত হয়ে যায় এবং সমুদ্রে অন্ধকার নামে, তখন সমুদ্রের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠা দৃশ্যটা সত্যিই খুব সুন্দর। এটা বর্ণনা করা অসম্ভব, আপনাকে এটা নিজের চোখে অনুভব করতে হবে।’ পোর্টহোলের গ্লাসের কিছুদিন পরপর সামুদ্রিক শ্যাওলাতে ডেকে যেতে। একজন ডুবুরি গিয়ে নিয়মিত তা পরিষ্কার করে দিতেন।
উত্তর পানামার উপকূল থেকে নৌকায় ১৫ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত ক্যাপসুলটি। দেখতে কিছুটা মডার্ন লাইট হাউসের মতো। ক্যাপসুলটির ওপরের চেম্বার থেকে একটি সরু সর্পিল সিঁড়ির টিউব দিয়ে সমুদ্রের নিচের চেম্বারের যাওয়া যায়। এই টিউবটি দিয়েই কোচের প্রয়োজনীয় সব জিনিস সরবরাহ করা হতো। ওপরের চেম্বারে তাঁর জন্য একজন ডাক্তার থাকতেন। সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ দিয়ে পাওয়ার পেত ক্যাপসুলটি।
রেকর্ডটি গড়ার মাঝামঝি সময়ে কোচের সঙ্গে দেখা করতে যান এএফপি-এর একজন সাংবাদিক। কোচ তাঁকে বলেন, আমি আশা করছি যে এটি আমাদের জীবন সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনা বদলে দিতে পারে। আমরা কোথায় বসবাস করতে পারি সে সম্পর্কে নতুন ধারণা দেবে। এছাড়াও কোচের সঙ্গে ইউটিউবার টোনি ভ্যাস একটি পডকাস্ট করেন। সেখানে তাঁরা সমুদ্রের জীবন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
জুল ভার্নের ‘টোয়েন্টি থাউজেন্ড লিগস আন্ডার দ্য সি’ উপন্যাসের ক্যাপ্টেন নিমোর ভক্ত কোচ। এই বিশ্ব রেকর্ড করার সময় তাঁর সঙ্গে ছিল ১৯ শতকের এই বিজ্ঞান কল্পগল্প একটি কপি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আইএফএল সায়েন্স