ফুঞ্জো লামা: দ্রুততম সময়ে এভারেস্টজয়ী নারী
নেপালের ফুঞ্জো ঝাংমু লামা কেবল একজন পর্বতারোহী নন, তিনি পর্বতারোহীদের অনুপ্রেরণা। মাত্র ১৪ ঘণ্টা ৩১ মিনিটে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছে নারীদের মধ্যে দ্রুততম আরোহণের রেকর্ড গড়ে তিনি বিশ্বকে বিস্মিত করেছেন। এই অসাধারণ অর্জনের মাধ্যমে ফুঞ্জো লামা শুধু নারীদের জন্যই নয়, সবার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।
‘ফুঞ্জো লামা ২২ মে বুধবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ৫২ মিনিটে মাউন্ট এভারেস্টের বেজক্যাম্প থেকে তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন। পরদিন ২৩ মে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ২৩ মিনিটে তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট চূড়ায় পৌঁছান।’ এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানায় মাউন্ট এভারেস্টের বেজক্যাম্পের পর্যটন বিভাগের ফিল্ড অফিসের প্রধান খিম লাল গৌতম।
সাধারণত পর্বতারোহীদের ২৯ হাজার ৩২ ফুট উঁচু এই পর্বতের চূড়ায় পৌঁছাতে কয়েক দিন সময় লাগে। উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এবং কম বায়ুচাপে শরীরকে বিশ্রাম দিতে পর্বতারোহীরা পর্বতের বিভিন্ন উচ্চতায় অবস্থিত ক্যাম্পগুলোয় আশ্রয় নেন। বিশ্রাম নিয়ে আবার পর্বতারোহণ শুরু করেন।
কিন্তু ৩০ বছর বয়সী ফুঞ্জো লামা ২০২১ সালের করা রেকর্ড ভেঙে ১১ ঘণ্টা কম সময়ে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান। ২০১৮ সালে লামা ৩৯ ঘণ্টা ৬ মিনিটে এভারেস্টে আরোহণ করে নারীদের মধ্যে দ্রুততম সময়ে শীর্ষে পৌঁছানোর রেকর্ড গড়েছিলেন। এই রেকর্ড ২০২১ সালে হংকংয়ের আদা সাং ইয়িং-হং ভেঙেছিলেন, যিনি ২৫ ঘণ্টা ৫০ মিনিটে পর্বতটি জয় করেছিলেন। নারীদের দ্রুততম এভারেস্ট আরোহণের রেকর্ড আবারও নিজের নামে করে নিয়েছেন ফুঞ্জো লামা।
কাঠমান্ডুতে ফিরে লামা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি রেকর্ড ভাঙার জন্য এভারেস্টে যাইনি। নেপাল পর্বতারোহণের জন্য বিখ্যাত এবং আমি আমার দেশের জন্য গর্বিত যে আমি এই ঐতিহ্যের অংশ হতে পেরেছি।’ কাঠমান্ডুতে বিমান থেকে নামার পর সহকর্মীরা তাঁকে উষ্ণ সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে অভাবনীয় সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান।
ফুঞ্জো লামা আরও বলেন, ‘একজন গাইড হিসেবে আমি চিন্তা করেছিলাম, বিশ্বকে দেখানোর জন্য আমরা কী করতে পারি?’ ‘আমরা দেখাতে পারি যে আমাদের নেপালে দক্ষ পর্বতারোহী গাইড আছে, যারা পর্বতারোহীদের সর্বোচ্চ চূড়ায় পথ দেখাতে পারে।’
আবেগাপ্লুত হয়ে লামা বলেন, ‘আমি পাহাড়ের কোলে জন্মেছি, পাহাড়ের বুকেই বড় হয়েছি...। তবে আমাদের সম্প্রদায় পর্বতারোহণের সঙ্গে খুব বেশি জড়িত নয়। এই অভিজ্ঞতা আমার জীবনে এক অমূল্য সম্পদ।’
পুরুষদের মধ্যে নেপালি পর্বতারোহী লাকপা গেলু শেরপা ২০০৩ সালে ১০ ঘণ্টা ৫৬ মিনিটে এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছে দ্রুততম আরোহণের রেকর্ড গড়েছিলেন। ফুঞ্জো লামার এই অসাধারণ কৃতিত্বের মাত্র এক দিন আগে আরেকজন বিখ্যাত নেপালি শেরপা পর্বতারোহী কামি রিতা ৩০তম বার বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতের চূড়ায় পৌঁছান।
সূত্র: সিবিএস নিউজ, ইয়াহু নিউজ