এখন বন্ধুর সঙ্গে মাঠে ব্যাটে-বলেই কেবল লড়াই হয় না; লড়াই গড়ায় বুদ্ধি ও প্রযুক্তির মাঠেও। আর বুদ্ধির খেলায় তারাই এগিয়ে থাকে, যারা সত্যিকারের সুস্থ আর নিরোগ। ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়লে তো রোগের সঙ্গে লড়াই করতেই ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়; অন্য কাজে মাথা খাটানোর সময় কই তখন। এখনই যদি খানিকটা সময় নিজের স্বাস্থে্যর প্রতি যত্ন নাও, তাহলে বছরজুড়েই ভালো থাকতে পারবে। আমরা তো জানি, তোমরা কত ব্যস্ত থাকো, তাই কেমন হবে সেই সব যত্নআত্তি, তোমাদের খুব সংক্ষেপে বলব।
ত্বকের যত্ন
ত্বক শরীরের সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ দেয়াল। এই দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভেতরটা কিন্তু কখনোই সুস্থ থাকতে পারে না। তাই ধুয়েমুছে ত্বককে সব সময় যত্নে রাখতে হয়। ত্বক ভালো রাখতে যা করতে হবে—
চকলেট বা কোমল পানীয় শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করে। শরীরে পানিশূন্যতা হলে ত্বকের পাশাপাশি ভেতরের যন্ত্রেও বড় গোলযোগ তৈরি হয়। তাই সব সময় পানি পান করতে হবে বেশি করে।
সবুজ পাতাওয়ালা সবজি আর মৌসুমি ফলে খানিকটা পেট ভরে নিয়ো। শরীরের পুষ্টি-চাহিদা যেমন মিটবে, ত্বকও ভালো থাকবে।
আর রাতে ঘুমোতে যাবার আগে অবশ্যই মুখটা ভালো করে ধুয়ে ফেলবে।
চোখের যত্ন
তুমি চোখের যত্ন নাও, দেখবে চোখ তোমার যত্ন নেবে। ঘটা করে তো বলার কিছু নেই, হলুদ ফলমূল আর শাকসবজি চোখের জন্য খুব ভালো। এগুলো তো খাবেই; আর যা করবে—
একটানা টেলিভিশন কিংবা কম্পিউটারের মনিটরে তাকিয়ে না থেকে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট অন্তর চোখ সরিয়ে নিয়ে দূরে কোথাও তাকাও। চোখ সুস্থ থাকবে।
নিবিষ্ট মনে কাজ করার সময় চোখের পাতা কম ফেলার একটা চেষ্টা থাকে। এতে বড্ড ক্ষতি হয় চোখের। চোখের পাতা বেশি বেশি করে ফেলে চোখকে ভেজা রাখতে পারলে খুব ভালো হয়।
হাতের তালুতে হাত ঘষে, হাতটা যখন খানিকটা গরম হবে, সেই হাত আলতো করে বন্ধ চোখে রাখো। এই উষ্ণতাটুকু চোখ ভালো রাখতে সাহাঘ্য করবে।
চুলের যত্ন
চুল পড়ে গেলে সমাধান খোঁজার চেয়ে চুল মাথায় থাকতেই যত্নবান হওয়াটা কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ। মাথায় খুশকি হলে তো আরেক বিড়ম্বনা। আর বিচিত্র সব চুলের স্টাইলে চেহারায়ও আসে বৈচিত্র্য। তাই চুলের খানিকটা যত্ন তো নিতেই হবে—
মাথায় খুশকি হলে গোসলের আধা ঘণ্টা আগে ভালো করে চুলে লেবুর রস মাখিয়ে নাও। চুল শুকালে শ্যাম্পু করে ফেল। খুশকিও যাবে। চুলের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।
নারকেলের তেল হালকা গরম করে চুলে, মাথার তালুতে মেখে নাও। ৩০ মিনিট পরে শ্যাম্পু করে ফেলো। দেখবে রুক্ষ চুলে প্রাণ ফিরেছে।
তরমুজ, কলা, গাজর—ভিটামিন ‘বি’ সমৃদ্ধ। খেতেও হবে বেশি করে। চুলের বৃদ্ধিতে আর সুস্থতার জন্য এগুলো খাওয়া খুব জরুরি।
দাঁতের যত্ন
আর দাঁত ভালো তো সবকিছু খেতেও ভালো। দাঁত তো শুধু খাওয়ার কাজ করে না। মুখের শ্রী বৃদ্ধিতেও সুন্দর দাঁত অপরিহার্য। দাঁত সুস্থ রাখতে, সুন্দর রাখতে যে কাজগুলো করবে প্রতিদিন—
প্রতিদিন দুই বেলা দাঁত মাজতেই হবে। একবার সকালে খাবার পরে আরেকবার রাতে ঘুমোবার আগে।
হাতের কাছে যে পেস্ট পাচ্ছ, সেটা দিয়েই দাঁত মেজে ফেলো না। একটু সচেতন হও। মা-বাবাকে বলো ফ্লোরাইড আছে এমন টুথপেস্ট কিনতে। কারণ, ফ্লোরাইডঅলা টুথপেস্ট দাঁতের জন্য ভালো।
টুথব্রাশটা হোক নরম ব্রিসেলের। একই টুথব্রাশ বেশি দিন ব্যবহার করা উচিত নয়। পুরোনো টুথব্রাশ জীবাণু বহন করে। তাই দেড় থেকে দুই মাস অন্তর টুথব্রাশটি পাল্টে ফেলো।
আর মনে রাখবে, বছরে অন্তত দুবার দাঁতের চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করবে। সমস্যা শুরু হওয়ার আগেই প্রতিরোধ গড়া মঙ্গলজনক।