বার্গার না পিৎজা? কোনটা তোমার সবচেয়ে প্রিয়? পছন্দের জাঙ্ক ফুডের তালিকায় থাকতে পারে ফ্রায়েড চিকেন আবার হয়তো ডোনাটস। চকলেট কিংবা পেস্ট্রিও অনেকের নিয়মিত পছন্দের খাবার। এমন যদি হয়, এসব খাবার আজ থেকে তুমি চাইলেও খেতে পারবে না! ভেবো না, খাবারগুলো উধাও হয়ে যাচ্ছে! তবে খাবারে থাকা ট্যাক্স দেখে হয়তো তুমিই বলে উঠবে, আর নয় জাঙ্ক ফুড!
‘জাঙ্ক ফুড স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’, পরপর দুই দিন বার্গার খেতে চাইলেই বড়দের এ কথা তুমি প্রায়ই শোনো, তা–ই না? আবার স্কুলের পাঠ্যবইয়েও নিশ্চয়ই পড়েছ, জাঙ্ক ফুডে থাকা প্রচুর পরিমাণ চিনি, ক্যালরি আর ফ্যাট আমাদের শরীরের জন্য কতটা অস্বাস্থ্যকর! বছরের পর বছর ধরে অনেক দেশ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করা নিয়ে। সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন, খাবারের অতিরিক্ত কর আদায় এমনকি আইনও আছে জাঙ্ক ফুড নিয়ে!
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে কলম্বিয়া ‘জাঙ্ক ফুড আইন’ চালু করেছে। যদিও আগে থেকেই জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করা নিয়ে এই ক্যাম্পেইন চলছিল, তবে সেটা কার্যকর হয়েছে চলতি নভেম্বর মাস থেকে। এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গড়ে কলম্বিয়ানরা প্রতিদিন ১২ গ্রাম লবণ খায়, যা লাতিন আমেরিকার পাশাপাশি বিশ্বেও সর্বোচ্চ। এ দেশের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের প্রায় এক–তৃতীয়াংশের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। জেনে নেওয়া যাক, এই ‘জাঙ্ক ফুড আইন’ আসলে কী!
অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বন্ধের সমাধান হিসেবে বিশ্বের প্রায় অনেক দেশই অতিরিক্ত কর আদায়কে বেছে নিয়েছে। ‘জাঙ্ক ফুড আইন’ চালু করার পর কলম্বিয়ার অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং চিনিযুক্ত পানীয়ের ওপর ‘স্বাস্থ্য কর’ ধীরে ধীরে কার্যকর করা হবে। খাবারগুলোয় ১০% থেকে শুরু করে, পরের বছর বেড়ে ১৫% এবং ২০২৫ সালে ২০% কর দিতে হবে পিৎজাপ্রেমীদের।
স্বাস্থ্য নীতির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চা বা কফিজাতীয় পানীয়, স্পোর্টস ড্রিংকস, সোডাসহ অন্যান্য ড্রিংকসে থাকা চিনির পরিমাণের ওপর নির্ভর করে কর আরোপ করা হবে। তবে সসেজকে এই আইন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
কলম্বিয়ায় যা-ই হোক, আমাদের দেশে এমন কোনো আইন নেই। ফলে তোমরা তো প্রায়ই জাঙ্ক ফুড খেয়ে অভ্যস্ত। তবে অতিরিক্ত এই খাবার যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, সেটা কিন্তু মোটামুটি স্বীকৃতই। তাই প্রতিবছর নানা উদ্যোগে দেশগুলো চেষ্টা করছে এ বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার। এখন তোমাদের মাথায় এমনও প্রশ্ন আসতে পারে যে জাঙ্ক ফুড অস্বাস্থ্যকর হলেও কেন আমাদের বারবার খেতে ইচ্ছা করে? কেন আমরা চাইলেও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, কোমল পানীয় এড়িয়ে চলতে পারি না? এর কারণ শুধু যে স্বাদ ভালো, তা কিন্তু নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমের অভাব, পুষ্টির ঘাটতি, এমনকি হরমোনের ভারসাম্যহীনতাও হতে পারে আমাদের জাঙ্ক ফুড খেতে চাওয়ার কারণ।
তাহলে এর সমাধান কী? তুমি যদি সত্যিই জাঙ্ক ফুড খেতে চাও, তাহলে সপ্তাহে একবারের বেশি না খাওয়াই ভালো। খেলেও আবার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবারে ফিরে যেতে হবে।