রানি এলিজাবেথ প্রতিদিন যে খাবার খেতেন

ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রাজত্ব করেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ৭০ বছর ধরে সিংহাসনে ছিলেন। ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ৯৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি। এই দীর্ঘ সময় রানির জীবন নিয়ে কৌতূহল দেখিয়েছে বিশ্ববাসী। তিনি কী খেতেন, কী পরতেন—এসব নিয়ে মানুষের আগ্রহ কমেনি এখনো। আজ আমরা জানব রানির খাদ্যতালিকা নিয়ে।

প্রতিদিন রানি তাঁর প্রিয় যে খাবারটি খেয়েছেন, তার নাম চকলেট বিস্কুট কেক। বাকিংহাম প্যালেসের সাবেক শেফ ড্যারেন ম্যাকগ্রাডি তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে ব্যাখ্যা করেছেন, শিশু বয়সে নার্সারিতে পড়ার সময় রানি প্রথম এর স্বাদ নেন। তখন থেকেই তিনি খাবারটির ভক্ত। প্রতিদিন নাশতায় খাওয়া মেনুটি খুব সাধারণ। এক টুকরো চকলেট বিস্কুট কেক। খুব সহজ রেসিপির একটা খাবার।

গোসল এবং ড্রেসিং করার পর রানি ঠান্ডা সিরিয়াল খেতেন। এটি তাঁর প্রিয় বলে বাজারে গুজব ছিল। মাঝেমধ্যে খাবার টেবিলে থাকত টোস্ট আর মোরব্বা। ডিম খেতেন খুব কম।

আমৃত্যু রানি রাজকীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। জীবনে ছোট ছোট আনন্দ দেয়, এমন খাবারগুলো বাদ দেননি রানি। এমনই এক খাবার চকলেট বিস্কুট কেক। এই জলখাবার তৈরি করাও তুলনামূলক সহজ। রানির ঘরেই খাবারটি তৈরি হতো। সঠিকভাবে বললে ঘরের বদলে প্রাসাদে বলতে হবে। প্রাসাদের হেঁশেলে তৈরি হতো এই খাবার। প্রতি দুই সপ্তাহে রানির সামনে মেনু হাজির করা হতো। রানি দুই সপ্তাহে কী খাবেন বেছে নিতেন।

প্রতিদিন এক টুকরো কেক খেতেন রানি। রানির শেফ সাক্ষাত্কারে জানিয়েছেন, খাবারটি এত পছন্দ করতেন, ভ্রমণের সময়ও এই খাবারটি তাঁর সঙ্গে সঙ্গে যেত। রানির মতো দীর্ঘকাল তুমি যদি বেঁচে থাকতে চাও, তবে তোমাকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতেই হবে। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য অনেক কিছুরই দরকার হয়। তবে সুষম খাদ্যের বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন

রানির প্রতিদিনের খাবার

দিনের শুরুতে চা ও বিস্কুট

চা ও বিস্কুট

রানির দিন শুরু হতো এক কাপ গরম আর্ল গ্রে চা দিয়ে। দুধ থাকত এই চায়ে, তবে চিনি নেই। সঙ্গে থাকত কয়েকটি বিস্কুট। ইংল্যান্ডে কুকিজ বা ক্র্যাকারকে বলে বিস্কুট। তাঁর প্রিয় বিস্কুট ছিল চকলেট বাথ অলিভারস, চকলেটে মোড়ানো ক্রাঞ্চি এই বিস্কুটই নিয়মিত খেয়েছেন রানি।

আরও পড়ুন

সকালের নাশতায় সিরিয়াল, টোস্ট আর জুস

সিরিয়াল, টোস্ট আর জুস

গোসল এবং ড্রেসিং করার পর রানি ঠান্ডা সিরিয়াল খেতেন। এটি তাঁর প্রিয় বলে বাজারে গুজব ছিল। মাঝেমধ্যে খাবার টেবিলে থাকত টোস্ট আর মোরব্বা। ডিম খেতেন খুব কম।

দুপুরের খাবারে পালংশাকের ওপর স্যামন মাছ

পালংশাকের ওপর স্যামন মাছ

দুপরের খাবারে উচ্চ প্রোটিন এবং কম কার্ব থাকত। শেফ ম্যাকগ্রাডি টেলিগ্রাফকে বলেছিলেন, গ্রিলড ডোভার সোল বা স্কটিশ স্যামন মাছের সঙ্গে থাকত পালংশাক ও লেবু। এটি তাঁর অন্যতম প্রিয় খাবার ছিল। তিনি গ্রিলড চিকেন খেলে সঙ্গে সাধারণ একটি সালাদও খেতেন। আলুর মতো স্টার্চযুক্ত কোনো খাবার খেতেন না।

আরও পড়ুন

বিকেলের চা

শসা স্যান্ডউইচ, ফ্রুট কেক এবং আর আর্ল গ্রে চা

বিকেলের চা রানির জন্য আবশ্যক ছিল। রাজপরিবারের জীবনীকার কেটি নিকোল জানিয়েছেন, মেনুতে ছিল শসা স্যান্ডউইচ, ফ্রুট কেক এবং আর আর্ল গ্রে চা।

রাতের খাবারে গ্রিল করা মাছ

ডেইলি মেইল–এর খবরে বলা হয়, ম্যাকগ্রাডি বলেছেন, রানি যখন একা একা খাবার খেতেন, তখন তাঁর রাতের খাবারের নিয়ম ছিল, ‘কোনো স্টার্চ থাকবে না’। সালাদ ও শাকসবজির সঙ্গে গ্রিল করা মাছ থাকত। তিনি খুব নিয়ম মানতেন। তিনি যা খুশি চাইলেই খেতে পারতেন। কিন্তু খাবারে শৃঙ্খলা ছিল বলে এত সুস্থ ছিলেন।

আরও পড়ুন

ডেজার্ট হিসেবে ডার্ক চকলেট

মাঝেমধ্যে ডেজার্টে তাঁর বাগান থেকে তাজা ফল পরিবেশন করা হতো। ব্যামোরাল ক্যাসল থেকে স্ট্রবেরি বা উইন্ডসর ক্যাসলের গ্রিনহাউস থেকে তাজা পিচ খাবার টেবিলে আসত। রানি চকলেট পছন্দ করতেন ডেজার্টে। শর্ত ছিল ডার্ক চকলেট হতে হবে। যত গাঢ় হবে ততই ভালো। মিল্ক চকলেট বা হোয়াইট চকলেটের প্রতি আগ্রহী ছিলেন না।

রানি যা খাননি

রানির প্লেটে কখনো রসুন উঠত না। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শেফ ম্যাকগ্রাডি বলেছেন, ‘রানি রসুন পছন্দ করেন না। তিনি আমার গরুর মাংসও পছন্দ করেছিলেন। রানি কখনো ফাস্ট ফুড অর্ডার করেননি। কারণ, তাঁর রান্নাঘরে ছিল ২০ জন শেফ। বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করার প্রয়োজন পড়েনি।’

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট ও ইট দিস

আরও পড়ুন