পৃথিবীতে বিস্ময়কর পাখির অভাব নেই। আজ পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে বিরল ১০ প্রজাতির পাখি সম্পর্কে বলব। দুর্ভাগ্যবশত, এই পাখিদের মধ্যে কয়েকটি পাখি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে আছে। পাখি শিকার এবং পাখির বসবাসের প্রাকৃতিক জায়গা ধ্বংস এর মূল কারণ। পাখিদের সুন্দর আকৃতি, মনোমুগ্ধকর আচরণ দেখে সবাই মুগ্ধ হয়। বিলুপ্তির মুখ থেকে পাখিকে কীভাবে রক্ষা করা যাবে, আমাদের ভাবা প্রয়োজন।
এরা দেখতে খুবই সুন্দর। এদের আদি নিবাস চীনের পশ্চিম অংশের বনাঞ্চলে। প্রকৃতিতে এদের খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। তাই এদের সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা বা তথ্যও খুব কম। এই ছোট পাখির রং এবং আকৃতি বেশ নজরকাড়া।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে সেবু ফ্লাওয়ারপেকার বিলুপ্ত হয়েছে বলে মনে করা হতো। কিন্তু ১৯৯২ সালে মধ্য সেবু সুরক্ষিত ভূমির ছোট এক চুনাপাথর বনে দেখা গিয়েছিল। সেবু হলো ফিলিপাইনের একটি দ্বীপপুঞ্জ। বর্তমানে ধারণা করা হয়, ৮৫ থেকে ১০৫টি ফ্লাওয়ারপেকার জীবিত আছে। এই অল্পসংখ্যক পাখিকে টিকিয়ে রাখতে জোর চেষ্টা চলছে।
স্পেকটেক্লড আইডার বা চশমাযুক্ত আইডার পাখি একরকম সামুদ্রিক হাঁস। এদের এমন নামের কারণ, চোখের চারপাশে থাকা চিহ্ন। চিহ্ন দেখে মনে হবে পাখিগুলো চশমা পরে আছে। এই সামুদ্রিক হাঁস আলাস্কা এবং উত্তর-পূর্ব সাইবেরিয়ার উপকূলে প্রজনন করে। এদের মূল খাদ্য মোলাস্ক নামের শামুকজাতীয় প্রাণী। তবে গ্রীষ্মের সময়টা এই পাখি ঘাস এবং বেরি ফল খায়।
রিবন টেইলড অ্যাস্ট্রাপিয়াদের দেখতে পাওয়া যায় পাপুয়া নিউগিনির কেন্দ্রীয় উচ্চভূমির পশ্চিম অংশের সাবালপাইন জঙ্গলে। এদের মাথার চারপাশে আকর্ষণীয় সবুজ এবং নীল রঙের পালক আছে। আর আছে একটি দীর্ঘ আলংকারিক লেজ। এই লেজের কারণেই এদের প্রকৃতিতে খুবই অনন্য দেখায়।
ম্যাগনিফিসেন্ট ফ্রিগেটবার্ডও একটি সামুদ্রিক পাখি। এর দৈত্যাকার ঠোঁট আছে। পুরুষ পাখিদের গলায় বড় লাল রঙের থলে থাকে। এরা অন্য পাখিদের নিজেদের খাদ্য বানানোর চেষ্টা করে।
মাদাগাস্কার পোচার্ড একটি বিপন্ন ডাইভিং হাঁস। এরা শুধু মাদাগাস্কার অন্তর্দেশীয় জলাভূমিতে বসবাস করে। ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকের দিকে এই প্রজাতির পাখিদের সংখ্যা খুব বড় সংখ্যায় হারিয়ে যেতে বসে। ১৯৯০-এর দশকে এরা বিলুপ্ত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এর অনেক বছর পর ২০০৬ সালে মাদাগাস্কারের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় ৯টি প্রাপ্তবয়স্ক হাঁস এবং ৪টি হাঁসের বাচ্চার খোঁজ পাওয়া যায়।
কাকাপোরাও একটি বিপন্ন পাখি। এরা নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় বাসিন্দা। এই তোতাপাখিরা উড়তে পারে না। পাখিগুলো পর্বতারোহে অভিজ্ঞ। এক ডাল থেকে অন্য ডালে লাফিয়ে যাওয়ার সময় এরা ডানার মাধ্যমে ভারসাম্য রক্ষা করে। ২০২২ সাল পর্যন্ত সংরক্ষক কার্যক্রমের মাধ্যমে সফলভাবে এদের সংখ্যা ৫১ থেকে বেড়ে ২৫২ হয়েছে।
হোয়াটজিনের পালকগুলো খুবই অনন্য। পাখিগুলোর নিজস্ব একটি গন্ধ আছে। এই গন্ধটি শিকারিদের তাড়া করে। গন্ধটির কারণে পাখিগুলোর ডাকনাম ‘স্কঙ্ক বার্ড’। স্কঙ্ক বার্ডদের দেখা পাওয়া যায় আমাজন বনে।
টনি ফ্রগমাউথরা অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ড এবং তাসমানিয়ার বাসিন্দা। এ অঞ্চলের সর্বত্র এদের পাওয়া যায়। পালক ধূসর, সাদা, কালো এবং লালচে বাদামি রঙের। পালকগুলো দেখতে হুবহু মৃত গাছের ডালের মতো।
পাখির প্রজাতিটি আকর্ষণীয় হলেও ভেলচুরাইন গিনি ফাউল দেখে একটি ভীতিকর প্রাণী বলে মনে হয়। এদের স্বতন্ত্র রং এবং রক্তলাল চোখের কারণে এমন মনে হয়। এই পাখিগুলো পূর্ব গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আফ্রিকান দেশ যেমন ইথিওপিয়া ও কেনিয়ার স্থানীয়। শুষ্ক মরুভূমির পরিবেশে প্রজনন করে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া