তোমরা হয়তো হাসছ আর ভাবছ এটাও জানে না, কোথায় আবার, শীতনিদ্রায় যায়! একদম ঠিক, ৫-এ ৫। জিপিএ-৫ আরকি! তবে প্রচলিত ‘শীতনিদ্রা’ বা ‘হাইবারনেশন’ শব্দটা আজকাল জীববিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেন না। কারণ, এতে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। সূক্ষ্ম বিচারে কৌশলগত ভুলও বটে। এর পরিবর্তে এখন বলা হয় ‘ব্রুমেশন’। শীতকালে সাপ-ব্যাঙ, সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীরা ‘হাইবারনেশন’ নয় ‘ব্রুমেশন’-এ যায়। অর্থ প্রায় শীতনিদ্রার কাছাকাছি। ঠান্ডা রক্তের প্রাণীরা খুব শীতে এই ব্যবস্থা নেয়। এরা কম সক্রিয় হয়ে দেহের শক্তি বাঁচায়। কোনো গর্তে বা খুপরিতে গুটিশুটি হয়ে পড়ে থাকে। এটাই ব্রুমেশন। আবার শীতের মধ্যে একটু গরম ভাব থাকলে বাইরে ঘোরাফেরাও করে। শীতে সাপ কেন কাবু হয়ে পড়ে? কারণ, সাধারণভাবে এদের বলা হয় ‘ঠান্ডা রক্তের’ প্রাণী। তার মানে, এরা খাদ্য বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপ ব্যবহার করে নিজ দেহের তাপমাত্রা স্থির রাখে না। বাইরের আবহাওয়ার তাপমাত্রার সঙ্গে ওদের দেহের তাপমাত্রা ওঠা-নামা করে। এখন আর ঠান্ডা রক্তের প্রাণী কথাটি ব্যবহার করা হয় না। বলা হয়, এরা পয়ক্যাল্যাথার্ম (Poikilotherm) বা একটোথার্ম (Ectotherm)। অর্থাৎ, এদের দেহের তাপমাত্রা স্থির থাকে না, ওঠানামা করে। অন্যদিকে মানুষ, পাখি প্রভৃতি চলতি কথায় উষ্ণ রক্তের প্রাণী। এখন উষ্ণ রক্ত না বলে বলা হয় হোমিওথার্ম (Homeotherm) প্রাণী। বাইরের আবহাওয়া যে রকমই হোক না কেন, আমাদের দেহের তাপমাত্রা সব সময় প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকে। খাদ্য বিপাক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট তাপ ব্যবহার করে আমরা দেহের তাপমাত্রা স্থির রাখি। বেশি শীতে লেপ মুড়ি দিয়ে আরামে ঘুমাই। আর সাপ চলে যায় গর্তের ভেতরে, চলাফেরা সীমিত করে আনে শক্তি ধরে রাখার জন্য।