শরীর ভালো রাখতে কতজন কত কিছুই না করে। কেউ ভোর ছয়টায় উঠে দুই মাইল দৌড়ায়, আবার কেউ সাতসকালে তেতো চিরতার রস খেয়ে দিন শুরু করে। কিন্তু এসব ছাড়াও শরীর একদম ঠিক রাখার একটা সহজ পন্থা আছে, সেটা কি জানো?
হাসির আর মজার সিনেমা দেখে বেশ একটা অট্টহাসি দিলেও কিন্তু শরীরের খুব ভালো ব্যায়াম হয়! না না, আমার কথা নয়, বলেছেন ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক! সত্যিই তো, হাসির চেয়ে বড় ওষুধ কি আর আছে? তাই তোমাদের জন্য থাকছে ‘ওষুধ’। মানে বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটা মজার সিনেমার গল্প!
ইংরেজ নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ারকে তো নিশ্চয়ই চেনো? তাঁর জনপ্রিয় মঞ্চনাটক দ্য কমেডি অব এররস অবলম্বনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লিখেছিলেন ভ্রান্তিবিলাস। এই কাহিনির ওপর ভিত্তি করেই ভারতে নির্মিত হয়েছে একই নামের চলচ্চিত্রটি। এক কাঠ ব্যবসায়ী তাঁর কাজের লোককে সঙ্গে নিয়ে ছোট্ট এক শহরে আসে ব্যবসার কাজে। কিন্তু এই শহরেই তার মতো হুবহু অন্য এক ভদ্রলোক আছে। এমনকি দুজনের চাকরের চেহারাও এক! ব্যস, শুরু হয় ভজকট পাকানো ভ্রান্তিবিলাস! মন খুলে হাসতে চাইলে এ ছবি দেখতেই হবে তোমার।
বিখ্যাত মার্কিন উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তা টমাস আলভা এডিসন। এই রে, সিনেমা ফেলে বিজ্ঞানের জ্ঞান কেন দিচ্ছি সেটা ভাবছ বুঝি? বলছি এখনি। ১৮৮৯ সালে তিনি উদ্ভাবন করলেন চলচ্চিত্রের জন্য নতুন এক ক্যামেরার প্রযুক্তি, কিনেটোস্কোপ। একই বছরে হাজার মাইল দূরে ইংল্যান্ডে জন্ম হলো যে শিশুটির, কে জানত বেশ কয়েক বছর বাদে সে হইচই ফেলে দেবে চলচ্চিত্র দুনিয়ায়?
বলছি সর্বকালের সেরা কৌতুকাভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের কথা। তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি হচ্ছে, ‘অভিনয়ের মাধ্যমে কাউকে কাঁদানোর চেয়ে হাসানো বেশি কঠিন।’ কীভাবে সেই কঠিন কাজটিকে তিনি জলবৎ তরলং করলেন, তা জানতে দেখতে পারো তাঁর পরিচালিত প্রথম নির্বাক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দ্য কিড। কুড়িয়ে পাওয়া এক শিশু আর একজন ভবঘুরে, এই দুইয়ের মজার রোমাঞ্চ নিয়ে ছবিটির গল্প। দেখে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে গেলে সেটা ছোটাতে আবার আমায় যেন ডেকো না!
ইংরেজি গল্প ছেড়ে এবার বলি ফ্রান্সের একটি ছবির কথা। ছবির নাম দ্য রেড বেলুন। গোলগাল একটা লাল বেলুন পড়ে ছিল রাস্তায়। স্কুলে যাওয়ার পথে সেটা কুড়িয়ে পেল ছোট্ট প্যাসকাল। কিন্তু দখলে রাখাটা হলো মুশকিল, যে দেখে সেই যে কেড়ে নিতে চায় টুকটুকে বেলুনটা। কী হলো শেষমেশ? উহু, আমি তো বলব না। জানতে চাইলে দেখতে হবে ৩৪ মিনিটের মজার এই ফ্যান্টাসি ছবি। ফরাসি ভাষার ছবিটিতে সংলাপও খুব কম।
ইতালিয়ান ছবি লাইফ ইজ বিউটিফুল। ইহুদি বাবা কাজ খুঁজতে আসে শহরে। সেখানে পরিচয় হয় মায়ের সঙ্গে। বাবা খুব রসিক মানুষ, মায়ের মন ভজাতে সে ঘটাতে থাকে একের পর এক মজার ঘটনা। তারপর কী? দেখলেই জানতে পারবে। কৌতুক, আবেগ আর তার সঙ্গে যুদ্ধ ও পরিবার - এই সবকিছু একসঙ্গে মিলে তোমাকে যেমন ভীষণ হাসাবে, তেমনি চোখে টলমল কান্নার সঙ্গে ঠোঁটের কোণে এনে দেবে মিষ্টি হাসি।
এবার বলি যুক্তরাজ্যের একটি গল্প, তবে সাবধান! নামটা শুনলেই কিন্তু পিঁপড়ে এসে ভিড় জমাতে পারে চারপাশে। সে যাকগে, আগে গল্পটা বলি। ছোট চার্লি পরিবারের সঙ্গে থাকে শহরের এক কোণে। সেই শহরেরই আরেক কোণে উইলি ওঙ্কার চকলেটের কারখানা, যেখানে ঘুরতে যেতে পারবে মাত্র পাঁচজন। জন্মদিনের টাকা দিয়ে কেনা চকলেট খুলে চার্লি কি পেল কারখানায় ঘোরার টিকিট? জানতে দেখো উইলি ওঙ্কা অ্যান্ড দ্য চকলেট ফ্যাক্টরি।
আরও দেখতে পারো অস্ট্রেলিয়ান চলচ্চিত্র বেব । চীনের শাওলিন সকার ছবিটা দেখেও খুব হাসি পাবে। হিন্দি ছবি স্ট্যানলি কা ডাব্বা, দু দোনি চার আর হলিউডের এলফ, মিসেস ডাউটফায়ার এ ছবিগুলোও খুব মজার! এ ছাড়া দেখতে পারো কুংফু পান্ডা সিরিজের ছবিগুলো। যদি আঙুলে সুতোয় নাড়ানো পাপেট তোমার পছন্দ হয়, তবে দ্য মাপেটস তোমার ভালো লাগবেই! যারা ফ্যান্টাসি আর রূপকথা ভালোবাসো, তাদের জন্য আছে দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড এবং দ্য উইজার্ড অব ওজ।
এ ছাড়াও চট করে মন ভালো করতে আছে দারুণ সব স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা। অ্যালার্ম, দি ক্যাট কেম ব্যাক, দ্য রং ট্রাউজারস, স্টিমবোট উইলি, নিক ন্যাক, ফর দ্য বার্ডস—নাম বলে শেষ করা যাবে না। ইউটিউবেই খুঁজে পাবে এমন মজার অসংখ্য সিনেমা। পিক্সারের পার্টলি ক্লাউডি, লিফটেড এবং জ্যাক জ্যাক অ্যাটাক ভালো লাগবেই, সেটা আমি লিখে দিতে পারি। এই যা, আমি তো লিখেই দিলাম!
এখনই সব কটা ছবি দেখার জন্য নিশ্চয় তোমার ভীষণ আগ্রহ হচ্ছে? ভাগ্যিস সুকুমার রায়ের রামগরুড়ের ছানার মতো মানুষের হাসতে কোনো মানা নেই। নইলে এই যে এত এত হাসির সিনেমা, এগুলোর কী গতি হতো একবার ভাবো দেখি?
আরও যা যা দেখতে পারো
শ্রেক
দ্য পাইরেটস! ব্যান্ড অব মিসফিটস
অ্যা নাইটমেয়ার বিফোর ক্রিসমাস
দ্য লেগো মুভি
দ্য অ্যারিস্টোক্র্যাটস
দ্য ল্যান্ড বিফোর টাইম
চিকেন রান
মেরি পপিনস
ব্যাক টু দ্য ফিউচার ট্রিলজি
হু ফ্রেমড রজার র্যা বিট
দ্য গুনিজ
হোয়ার দ্য ওয়াইল্ড থিংস আর
শার্লট’স ওয়েব
পি-উইজ বিগ অ্যাডভেঞ্চার