জাপানিজ অ্যানিমে–জগতে কিছু কিছু কিংবদন্তি কাজ রয়েছে, যাদের সঙ্গে গল্পকথার ড্রাগনের তুলনা করা চলে। অন্য প্রাণীরা একদিকে আর ড্রাগন থাকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে, শক্তির অনিবার্য প্রতীক হয়ে। ঠিক তেমনই এসব অ্যানিমে এতটাই জনপ্রিয় আর বিশেষ যে এগুলোও হয়ে উঠেছে পুরো ইন্ডাস্ট্রির ধ্রুবতারা। অ্যানিমে–ভক্তমাত্রই এদের নাম জানা থাকবে। যেমন ড্রাগন-বল, সেইলর মুন, ফুল মেটাল আলকেমিস্ট ব্রাদারহুড, নারুতো, ওয়ান-পিস, নিওন জেনেসিস এভাঞ্জিলিয়ন, ওয়ান-পাঞ্চ ম্যান, অ্যাটাক অন টাইটান প্রভৃতি। এসব অ্যানিমে থেকে তৈরি হয়েছে বিশেষ বিশেষ চর্চা, যা পরবর্তী সময়ে বহু অ্যানিমে অনুসরণ বা অনুকরণ করেছে এবং সাফল্য পেয়েছে। তোমাদের অনেকেই হয়তো এগুলো দেখেছ, পছন্দ করেছ। তেমনটা ভেবেই সাধারণত এগুলোর বাইরে যেসব অ্যানিমে আমার পছন্দ হয়েছে, সেসব নিয়ে বলি। কারণ, এর ফলে তোমরাও অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত অ্যানিমে সম্পর্কে জানার একটা সুযোগ পাবে, হয়তো সেগুলো তোমাদের পছন্দও হবে। তবে মাঝেমধ্যেই তোমাদের চিঠি পাই জনপ্রিয় অ্যানিমে নিয়ে লেখার জন্য। ইতিপূর্বে তাই লিখেছিলাম ওয়ান-পাঞ্চ ম্যান নিয়ে। আর আজও একটি কিংবদন্তি কাজ নিয়ে কথা বলব, নামটা বোধ হয় অনেকের কাছেই পরিচিত—হান্টার X হান্টার।
সিরিজ নিয়ে বলার আগে অবশ্যই বলতে হবে সিরিজের লেখকের কথা। হান্টার X হান্টার কিংবা শিকারি X শিকারি অ্যানিমেটি যেমন কিংবদন্তি, এর লেখকও ঠিক তেমনই। জাপানের বড় বড় কিংবদন্তি মাঙ্গাকা-ওসামু তেজুকা, নাওকি উরাসাওয়া, এচিরও ওদা, আকিরা তোরিয়ামা, রুমিকো তাকাহাশি, তাকাহিকো ইনোউয়ে প্রমুখের সঙ্গে এক কাতারে বসে হান্টার X হান্টার–এর লেখক ইওশিহিরো তোগাশির নাম। একেবারে শৈশব থেকে আঁকাআঁকির ঝোঁক ছিল তোগাশির, তবে পেশা হিসেবে শিক্ষকতা বেছে নেওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কলেজে পড়াকাল থেকে অবশ্য টুকিটাকি কাজ পাঠাতে শুরু করেন ম্যাগাজিনে এবং তা প্রকাশকের পছন্দ হয়। কিছু পুরস্কারও এ সময় লেখকের আগ্রহ বাড়িয়েছিল। পরে শিক্ষকতার লক্ষ্য ত্যাগ করে প্রকাশকের আহ্বানে চলে আসেন টোকিও শহরে। সেখানেই শুরু হয় তাঁর কর্মযজ্ঞ। লেখেন ইউ ইউ হাকুশোর মতো বিখ্যাত একটি সিরিজ। ঠিক এই সময়ই তিনি সান্নিধ্যে আসেন তাঁর জীবনসঙ্গী নানাকো তাকেউচির, যিনি বিখ্যাত শোওজো (কিশোরীদের উপযোগী) মাঙ্গা সিরিজ সেইলর মুন–এর লেখিকা। পরে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তোগাশির বিখ্যাত হওয়ার জন্য ১৯৯০-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হওয়া ইউ ইউ হাকুশো সিরিজটিই যথেষ্ট ছিল। প্রায় ৮০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হওয়া এই সিরিজকে কেউ তাচ্ছিল্য করতে সাহস করবে না। কিন্তু এরপর তিনি যা লিখলেন, তা ইতিহাস রচনা করার পাশাপাশি শোওনেন (কিশোরদের উপযোগী) মাঙ্গা তথা অ্যানিমে–জগতে প্রতিষ্ঠিত করল এমন কিছু সূত্র আর চরিত্র, যা ইতিহাস হয়ে রইল।
হান্টার X হান্টার অ্যানিমের কাহিনি প্রথমে আসে মাঙ্গা রূপে। ১৯৯৮ সালের মার্চ থেকে সিরিজটি প্রকাশিত হতে শুরু হয় জাপানের সাপ্তাহিক শোওনেন জাম্প ম্যাগাজিনে। যা ২০০৬ সাল পর্যন্ত মোটামুটিভাবে ধারাবাহিক থাকলেও পরে নানা সময় বিরতির মুখ দেখেছে। তোমরা বিশ্বাস করবে কি না জানি না, তবে সিরিজটি এখনো অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। যদি লেখক তাঁর অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হতে সক্ষম হন, তবে একদিন সিরিজটি শেষ হওয়ারও আশা রয়েছে বৈকি!
কিছু কিছু সিরিজ থাকে, যা একাধিকবার অ্যানিমেতে রূপান্তরিত হয়েছে জনপ্রিয়তার কারণে। হান্টার X হান্টার তেমনই একটি অ্যানিমে। নিপ্পন অ্যানিমেশন স্টুডিওর হাত ধরে সিরিজটি প্রথম অ্যানিমেতে রূপান্তর শুরু হয় ১৯৯৯ সালে, যা ২০০৩ সাল পর্যন্ত একাধিক সিজন আকারে নির্মিত হয়। পরে ২০১১ সালে ম্যাডহাউস স্টুডিওর মাধ্যমে একটি পুনর্নির্মিত সংস্করণ সম্প্রচারিত হয়, যার স্থায়িত্বকাল ২০১৪ অবধি। কাহিনি অবশ্য এখনো ফুরায়নি, তাই ভবিষ্যতে আরও পর্ব আসবে, এমনটা আশা করা যেতেই পারে। হয়তো অন্য কোনো স্টুডিও তখন কাঁধে তুলে নেবে হান্টার X হান্টার নির্মাণের গুরুদায়িত্ব!
এই গল্পের শুরুটা হয় ১২ বছরের এক কিশোরকে নিয়ে। ছেলেটির নাম গন ফ্রিকস। ছোট্ট একটি গ্রামে আন্টির কাছে থাকে সে। মা-বাবা দুজনের স্নেহবঞ্চিত, কিন্তু এই বিচ্ছেদ তার স্বভাবে বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি কেবল আন্টি মিতোর ভালোবাসার কারণে। খোলামনের প্রাণোচ্ছল ছেলে হয়ে বড় হতে থাকে গন। অরণ্য তার প্রিয়, পশুরা তার বন্ধু। মানুষের মনে সহজেই স্থান করে নেওয়ার একটা সহজাত গুণ রয়েছে তার। গনের বাবা জিন ফ্রিকস পেশায় একজন হান্টার বা শিকারি। এই পেশাজীবীদের জীবনটা বড় বিপজ্জনক। তারা ঘুরে বেড়ায় পৃথিবীর অনাবিষ্কৃত অঞ্চলে কিংবা খুঁজে ফেরে বিলুপ্ত সব ঐশ্বর্য-গুপ্তধন। ঘাঘু বদমাশ কিংবা হিংস্র পশুদের ঘায়েল করায় যেমন তারা পটু, তেমনি তাদের পাকড়াও করতেও সিদ্ধহস্ত। ছেলেকে বোন মিতোর কাছে রেখে বহু আগেই জিন চলে গেছে শিকারি পেশায় যোগ দিতে। সেই থেকে তার কোনো হদিস নেই!
গন যখন জানতে পারল বাবার কথা, তখন সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলো বাবার অনুসন্ধানে। সে–ও যুক্ত হতে চাইল শিকারি পেশায়। কিন্তু সে পেশা তো সবাইকে সুযোগ দেয় না। তার জন্য দিতে হয় বিশেষ পরীক্ষা। এমন সব চুলচেরা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাছাইপ্রক্রিয়া হয়, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে পেরিয়ে যাওয়া অসম্ভব। আবার একেক বছর পরীক্ষা একেক রকম হয়, তাতে দু–একজন পাস করতেও পারে কিংবা অকৃতকার্যও হতে পারে সবাই। এসব তথ্যের গন কিছু কিছু জানতে পারল ঠিকই, কিন্তু সে লক্ষ্যে অবিচল। তাকে থামাতে না পেরে মিতো যাওয়ার অনুমতি দিল।
শুরু হলো যাত্রা। সে এক বিশাল অভিযান। তুফানি জলপথে ছোট্ট নৌযানে উঠে পড়ল গন। সঙ্গে আরও অনেকেই নাবিক হলো, যাদের প্রত্যেকেরই স্বপ্ন তারা হবে শিকারি। কিন্তু তাদের দম আছে তো? তুফান নিল তাদের প্রথম পরীক্ষা। এখানেই গন খুঁজে পেল তার দুই অসমবয়সী বন্ধু লেওরিও আর কুরাপিকাকে। দুজনেরই শিকারি হতে চাওয়ার উদ্দেশ্য ভিন্ন, কিন্তু পরীক্ষায় উতরে গিয়ে শিকারির লাইসেন্স পেতে তারা অবিচল।
এগিয়ে এল একের পর এক বাধার দেয়াল। প্রতিটি পরীক্ষার আছে পরীক্ষক, তাদের বিচারে পাস না করলেই ফেল। এভাবেই পরীক্ষার এক পর্যায়ে গন দেখা পেল এক কিশোরের। কিলুয়া নামে ছেলেটির সঙ্গে তার ভাব হলো মূলত বয়সের সমতার কারণেই। অচিরেই তারা হয়ে উঠল এক আত্মা, এক প্রাণ। একজনের প্রতি আরেকজনের তৈরি হলো নিখাদ বিশ্বাসের সেতু। বাকি পরীক্ষাগুলো এই চারজন একত্রে কিংবা পেরিয়ে চলল বিচ্ছিন্নভাবে। পরীক্ষায় পরীক্ষকের দেওয়া কাজগুলোর থেকেও বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াল টোম্পা আর হিসোকা নামের দুজন। টোম্পা প্রতিবছর পরীক্ষা দিতে আসে কেবল নবীন পরীক্ষার্থীদের বিপদে ফেলে তাদের স্বপ্নভঙ্গ করতে। অপর দিকে হিসোকা বড় ভয়ানক, পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষকের প্রাণনাশ করার বদনামও তার রয়েছে। সার্কাসের জোকারের মতো প্রসাধন করে থাকা হিসোকাকে দেখে তাই গন, কিলুয়া, লেওরিও, কিংবা কুরাপিকা—প্রত্যেকেরই অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে।
এভাবেই এগিয়ে চলে গল্পের কাহিনি। গন কি শেষ পর্যন্ত শিকারি হওয়ার ছাড়পত্র পেল? কিলুয়ার সঙ্গে তার বন্ধুত্ব তাকে কত দূর নিয়ে গেল? লেওরিও কিংবা কুরাপিকার স্বপ্ন কি পূরণ হলো? হিসোকা কী চায়? হান্টার পরীক্ষকেরা কেন ন্যায়-অন্যায় বিচার না করে কেবল দক্ষতা বিচার করে? শিকারিরা ঠিক কতখানি বিপদের মুখোমুখি হয়? ছাড়পত্র পেলেই কি পাক্কা শিকারি হওয়া যায়, নাকি তার জন্য অর্জন করতে হয় আরও বেশি কিছু? কিলুয়ার অতীতে লুকিয়ে আছে কোন গভীর বিষাদ? বাবার সঙ্গে কি গনের শেষ পর্যন্ত দেখা হবে? এসব প্রশ্নের জবাব ধাপে ধাপে রয়েছে হান্টার X হান্টার–এর গল্পে।
এ এক বিরাট আয়োজন, অল্প কথায় কীভাবে বলি! বলতে আরও অনেক বড় পরিসর প্রয়োজন। মেদহীন কিআ তবু যেটুকু জায়গা দেয়, তা কিন্তু নেহাত কম নয়। সে জন্য অ্যানিমে-কথন লেখক হিসেবে আমি কৃতজ্ঞ। তাই চেপেচুপে যতটুকু তোমাদের জানানো যায়, সেই চেষ্টাই করছি। হান্টার X হান্টার–এর মূল শক্তির কথাতেই জোর দেওয়া যাক। যদি প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় ক্রম করা হয়, তবে হান্টার X হান্টার-এর মূল শক্তি হবে চরিত্রায়ণ-আবেগ-ঘটনাক্রম। তবে আরও একটা জিনিস এই সিরিজকে আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গেছে, তা হচ্ছে গল্পের বদমাশেরা। তোমরা ভালো করে লক্ষ করলে দেখবে যে গল্পের বদমাশ যত তাগড়া হয়, সেই গল্প মনে তত বেশি প্রভাব ফেলে। নায়কের বিজয়ে তত বেশি আনন্দ হয়। এই গল্পের শয়তানি চরিত্রগুলো একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো। কখনো কখনো এদের অতীত কিংবা উদ্দেশ্য জানলে এদের প্রতি মনোভাব বদলে যায়। আবার কিছু এমন চরিত্রও রয়েছে, যাকে এই উপকারী মনে হবে, আবার পরবর্তী সময়েই মনে হবে ঘোর শত্রু। এর অন্যতম বড় নিদর্শন হিসোকা চরিত্রটি।
এ ছাড়া আছে বন্ধুত্ব। তোমাদের প্রায়ই অ্যানিমেতে থাকা বন্ধুত্ব নিয়ে বলি। কিন্তু এই গল্পে কিলুয়া ও গনের বন্ধুত্ব সম্ভবত পুরো অ্যানিমে–জগতেই সর্বশ্রেষ্ঠ। বন্ধুর জন্য বন্ধু কতটা করতে পারে, তা বারবার গল্পে উপস্থাপন করা হয়েছে। বন্ধুর বিপদে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া, বন্ধুকে নিঃস্বার্থভাবে গ্রহণ করা, বন্ধুকে বাঁচাতে বিরাট ঝুঁকি নেওয়া, কী না হয়েছে এতে। গল্পের এক পর্যায়ে কিলুয়াকে উদ্ধার করতে গন পৌঁছে যায় দুর্গম এক পরিবেশে। নানা বাধা পেরিয়ে জয় হয় বন্ধুত্বের। আর কিলুয়াও বন্ধু অন্তঃপ্রাণ। গনের বাবাকে খুঁজে পাওয়ার যাত্রায় নিঃশর্ত যুক্ত হয়ে মোকাবিলা করে অগণিত ভয়াল পরিস্থিতির।
চরিত্রের রূপান্তর এই গল্পে যেভাবে ঘটেছে, তা পরের অনেক অ্যানিমের জন্য শিক্ষকের কাজ করে। প্রতিটি চরিত্র নিজের মতো বিশেষ। লেওরিও যেভাবে ভয়কে জয় করে কিংবা কুরাপিকা একটি সাধারণ চরিত্র হিসেবে এসে যেভাবে একেবারে মোক্ষম চরিত্র হয়ে ওঠে, তা দেখে দর্শক আবেগতাড়িত হবেই। তোমরা যখন দেখবে, তখন বুঝবে আমি ঠিক কী বলতে চাইছি। তিল তিল করে শক্তি সঞ্চয় করে গন আর কিলুয়াও কিন্তু কুরাপিকার রূপান্তর, তার দৃঢ়তা ওদেরও পিছে ফেলে দেয়। গল্পের অনেক সময় দেখা যায়, প্রধান চরিত্র হওয়া সত্ত্বেও গন দাঁড়িয়ে গেছে পেছনের সারিতে, সেখানে চালকের আসনে আছে কুরাপিকা কিংবা অন্য কোনো শিকারি চরিত্র। ব্যাপারটা এতটাই যৌক্তিকভাবে করা হয়েছে যে তোমাদের বিন্দুমাত্র বিরক্ত না লেগে বরং মনে হবে, সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন লেখক।
আজকাল অনেক অ্যানিমেতেই গেমিফিকেশনের বিষয়টা লক্ষ করা যায়। এ ধরনের অ্যানিমে নিয়ে তোমাদের বলেছি, যেমন ধরো বোফুরি; কিংবা সোর্ড আর্ট অনলাইন, ডট হ্যাক, ওভারলর্ড, নো গেম নো লাইফ, লগ হরাইজন, শাংরিলা ফ্রন্টিয়ার প্রভৃতি আরও অনেক অ্যানিমে আছে, যেগুলো নিয়ে বলা হয়নি। যেখানে মূল চরিত্র একটি গেম–জগতে গিয়ে পড়ে এবং সেখানে গেমের শর্ত মেনে তাদের চলতে হয়। এ ধরনের চর্চা হান্টার X হান্টার অ্যানিমেতেও রয়েছে। আর ব্যাপারটা এমন চমৎকারভাবে করা হয়েছে, যা গল্পের বাস্তব জগতের সঙ্গে যথার্থভাবে মিশে গেছে। যেহেতু গল্পটি বেশ আগের, ফলে আধুনিক অনেক অ্যানিমে যে এখান থেকে বেশ ভালো রকমের অনুপ্রেরণা পেয়েছে, তা অনায়াসেই অনুমান করা যায়।
আগেই বলেছি, গল্পটির ওপর দুবার অ্যানিমে নির্মিত হয়েছে। আমি অপেক্ষাকৃত নতুন যে রূপান্তরটি হয়েছে, তা দেখারই পরামর্শ দেব। এতে ভিডিও কোয়ালিটি আগের তুলনায় কিছুটা আধুনিক আর আঁকা কিঞ্চিৎ ভালো হয়েছে। ফলে দেখতে আরাম হবে।
সিরিজে যুক্ত হয়েছে অসংখ্য গান, যার কোনোটাই আমি শুনে দেখিনি, তাই কেমন হয়েছে, সে বিষয়ে আলোকপাত করতে পারছি না। যখন অ্যানিমে খুব ভালো হয় আর তাতে অনেকগুলো পর্ব থাকে, আমি একের পর এক ঝটপট দেখে যেতে থাকি। গানের জন্য ঠিক থামতে পারি না। তবে সাধারণত বড় বাজেটের অ্যানিমেগুলোতে ভালো ভালো জাপানি ব্যান্ড বা সংগীতশিল্পীকে দিয়ে সুর সৃষ্টি করা হয়। আমার ধারণা, সুরপ্রেমীদের খুব একটা হতাশ করবে না এই অ্যানিমেও। তাই আমার পক্ষ থেকে এই দায়িত্ব বরং তোমাদের জন্য রইল, কোনো গান ভালো লাগলে কিআকে জানিয়ো। তেমন চমৎকার কিছু হলে আমিও না হয় শুনে দেখব।
সবশেষে বলব, আমার পছন্দের তালিকায় সেরা ১০–এ এই অ্যানিমে অনায়াসে থাকবে। সিরিজটি সমাপ্ত নয়, লেখক এখনো একটু একটু করে গল্প বলে চলেছেন, তবু আমি হান্টার X হান্টারকে তালিকার বাইরে রাখতে পারিনি। কারণ, গল্পটা শ্রদ্ধা অর্জন করে নিয়েছে নিজ গুণে। ভবিষ্যতে যদি লেখক কাহিনি শেষ করতে না–ও পারেন, তবু এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না। তবে আমি আশাবাদী, লেখক কোনো না কোনো উপায়ে গল্প লিখে শেষ করবেন আর গল্পের শেষটুকু হবে সর্বশ্রেষ্ঠ। অবশ্য আমার কথায় অন্ধভাবে বিশ্বাস করার প্রয়োজন নেই, নিজেরাই দেখে যাচাই করে নাও। তারপর জানিয়ো কেমন লাগল, তোমাদের পছন্দের তালিকার সেরা ১০–এ এই অ্যানিমে জায়গা করে নিতে পারল কি না? সম্ভবত পারবে।