বিমান দুর্ঘটনার পর চার ভাই-বোন কীভাবে ৪০ দিন বনে টিকে থাকল, তা নিয়ে নেটফ্লিক্স একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেছে। বড় বোন লেসলি, যার বয়স মাত্র ১৩, নিজে আহত হয়েও ছোট ভাই-বোনদের রক্ষা করেছে। কিশোর আলো গল্পটি ছেপেছিল। এখানে পাওয়া যাবে আমাজনে টিকে থাকার গল্পটি।
গত বছর মে মাসের প্রথম দিন কলম্বিয়ার রেইনফরেস্টে একটি বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। মায়ের সঙ্গে ছিল চার ভাই–বোন। দুর্ঘটনায় মা মারা যান। তবে বিমান থেকে হারিয়ে যায় চার ভাই-বোন। সূত্র হিসেবে রেখে যায় ডায়াপার, ছোটদের একটি বোতল, একটি ডামি বা শিশুদের চুষনি। এই শিশুদের বয়স ছিল ১১ মাস থেকে ১৩ বছরের মধ্যে। ছোট একটি বিমানে তারা আমাজনের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। আমাজনের মধ্যে বিমানটি ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করে। বিমানের তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক যাত্রী মারা যান। যাঁর মধ্যে ছিলেন হুইতোতো আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্য-শিশুদের মা। শিশু উদ্ধারের অবিশ্বাস্য গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্র।
বিমান দুর্ঘটনার পরপরই দুটি অনুসন্ধানকারী দল শিশুদের খুঁজতে শুরু করেছিল। সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন হোপ’ নামে একটি অভিযান শুরু করে। সেনারা বনের বিশাল অংশ ধরে তল্লাশি চালান। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে শিশুদের নানির একটি রেকর্ডিং বাজানো হয়, যেখানে বলা হয়, শিশুরা যেন এক জায়গায় অবস্থান করে। পানির কাছাকাছি থাকে। অন্যদিকে আদিবাসী স্বেচ্ছাসেবকদের একটি দলও অনুসন্ধান শুরু করে। যাঁরা বন নিয়ে গভীর জ্ঞান রাখতেন। তাঁরা আবার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে চাননি। শেষমেশ এই দুই দল একত্রিত হয়ে অনুসন্ধান করে।
বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগেছিল। তারপরও শিশুদের পাওয়া যায়নি। তখন প্রশ্ন উঠেছিল, তারা কি বন্দুকধারী ইউনিফর্ম পরা লোকদের ভয়ে পালিয়ে থাকতে পারে? কারণ, কলম্বিয়ার দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের সময় আদিবাসীরা সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরাও জানান, ছোটদের জীবিত খুঁজে পেলে তাদের সৎবাবা ম্যানুয়েল রানোকের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে তারা চিন্তিত। কারণ, শিশুরা তাকে পছন্দ করে না।
অনুসন্ধান দলের সঙ্গে ছিলেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতারা। এ গল্পের আসল নায়ক হয়ে ওঠে বড় বোন লেসলি। নিজের আহত পা নিয়ে সে কীভাবে ছোট ভাই-বোনদের চল্লিশ দিন বাঁচিয়ে রেখেছিল, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য।
দ্য লস্ট চিলড্রেন নেটফ্লিক্সে দেখা যাচ্ছে ১৪ নভেম্বর থেকে।