আমার জম্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। সেখানেই আমার বেশির ভাগ ঈদ কেটেছে। চট্টগ্রাম শহরের নবাব সিরাজউদ্দৌলা রোডে আমার দাদুর বাসা ও নানুর বাসা দুটোই। ঈদের দিন নামাজ শেষে প্রথমেই পারিবারিক কবরস্থানে কবর জিয়ারত করতে যাই আমরা।
ছোটবেলার ঈদের একটা স্মরণীয় ব্যাপার হলো, ঢাকায় থাকা আমাদের আত্মীয়স্বজন ঈদ করতে চট্টগ্রামে আসতেন। একটা উৎসব উৎসব পরিবেশ সৃষ্টি হতো তখন। আমরা দাদুর বাসায় থাকতাম। সকালে ঈদের নামাজ পড়তে যেতাম আব্বুর সঙ্গে। তারপর নামাজ শেষে আমাদের পারিবারিক কবরস্থানে কবর জিয়ারত শেষ করে বাসায় ফিরে আব্বু–আম্মুকে সালাম করে আম্মুর রান্না করা সেমাই খেতাম। তারপর চলে যেতাম আমার নানুর বাসায়, যেটা আমার দাদুর বাসার উল্টো পাশেই। ওখানে কিছুক্ষণ থেকে তারপর সবাই মিলে চট্টগ্রাম শহরজুড়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা আমাদের অন্য আত্মীয়স্বজনের বাসায় ঘুরে বেড়াতাম। নানুর বাসার আত্মীয়রা রাতে আমাদের বাসায় আসতেন। দাদুর বাসা আর নানুর বাসার আত্মীয়স্বজনের একসঙ্গে হওয়া হতো আসলে ঈদের সময়টাতেই।
ঈদের দিন সবাই মূলত রাতের খাবারটা আমাদের বাসাতেই খেত। আমার আম্মুর রান্না সবার কাছে খুব প্রিয় ছিল। এ ছাড়া আমার প্রচুর বন্ধুবান্ধব ঈদে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসত। আর ঈদের সালামি পাওয়ার আনন্দ তো ছিলই। ঈদের দ্বিতীয় দিন অথবা তৃতীয় দিনে আমার খালামণির বাসায় সবার দাওয়াত থাকত। আত্মীয়স্বজনের একটা বড় মিলনমেলা হতো এই দাওয়াতে। এটাও আমার ছোটবেলার ঈদের একটা স্মরণীয় স্মৃতি।